হোম > জীবনধারা > খাবারদাবার

আজ বিশ্ব পাস্তা দিবস

মোশারফ হোসেন

প্রতিবছরের ২৫ অক্টোবর বিশ্ব পাস্তা দিবস হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়। যাঁরা পাস্তা খেতে ভালোবাসেন, দিনটি তাঁদের জন্যই। অনেকের মতে, বিখ্য়াত পর্যটক ও বণিক মার্কো পোলো চীন থেকে ইতালিতে পাস্তা নিয়ে আসেন। তবে ঐতিহাসিক তথ্যানুসারে, খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ সাল থেকে মানুষ পাস্তা খাওয়া শুরু করে। ময়দা, পানি ও ডিম দিয়ে তৈরি পাস্তা একসময় দক্ষিণ ইতালির প্রধান খাবার হয়ে ওঠে। কারণ, সিসিলি ও দক্ষিণ ইতালিতে গমের উৎপাদন বেশি এবং দামেও সস্তা ছিল। উত্তর ইতালিতে পাস্তার খামির বানাতে ময়দা ও ডিম ব্যবহার করা হয়। আবার দক্ষিণ ইতালিতে ব্যবহৃত হয় উৎকৃষ্ট মানের সুজি ও পানির মিশ্রণ।

ইতালির সবচেয়ে ভালো মানের পাস্তা তৈরি হয় এমিলিয়া রোম্যাগনা অঞ্চলে। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের পাস্তা বিভিন্ন রেসিপিতে রান্না করে উদরপূর্তি ও উপভোগ করছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ। আমাদের দেশেও এখন পাস্তা খাবার হিসেবে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

পাস্তা দিবস যেভাবে এল
পাস্তা যখন ধীরে ধীরে এক দেশ থেকে অন্য দেশ হয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে যেতে শুরু করল, তখন পাস্তা উৎপাদন ও এর গুণাগুণ নিয়ে কাজ করতে বিভিন্ন দেশে গড়ে ওঠে পাস্তাপ্রেমী ও উৎপাদকদের নিজস্ব কিছু সংগঠন।

 বিশ্বায়নের মুখে দাঁড়িয়ে একসময় আন্তর্জাতিক পাস্তা সংস্থা গড়ারও চিন্তা করতে শুরু করে ছোট ছোট এই সংগঠনগুলো। ১৯৯৫ সালের ২৫ অক্টোবর ইতালির রোমে বিশ্ব পাস্তা কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৯৮ সালে নেপলস শহরে বসে তাদের দ্বিতীয় অধিবেশন। আর সেই অধিবেশনেই ২৫ অক্টোবরকে বিশ্ব পাস্তা দিবস হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিভিন্ন ধরনের পাস্তা
বিশ্বে প্রায় ৬০০-এর বেশি আকৃতির পাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে স্প্যাগেটি, পেনে, রিগাটোনি, ফেট্টুসিন, লিঙ্গুইন, অরজো, রাভিওলি, জিটি, টর্টেলিনি, ম্যাকারনি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

এসব পাস্তা আবার দুই ধরনের হয়। শুকনো ও তাজা পাস্তা। শুকনো পাস্তা বাজার থেকেই কেনা হয়, তাজা পাস্তা ঘরেই তৈরি করা হয়।

যেভাবে উদ্‌যাপন করবেন পাস্তা দিবস
পাস্তা দিবস উদ্‌যাপন করতে ঘরে বসেই তৈরি করে নিন পছন্দের পাস্তা। আর উপভোগ করুন মজাদার ও মোহনীয় স্বাদ। বেশির ভাগ মানুষই সস ছাড়া পাস্তা খেতে পছন্দ করেন না। সস বানাতে একটু গলানো মাখন ও রসুন মিশিয়ে নিয়ে পাস্তার স্বাদ চেখে দেখা যেতে পারে। পাস্তায় পনির সস ও টমেটো সস সাধারণভাবেই বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে কেউ কেউ বাটারনাট স্কোয়াশ কারবোনারা, অ্যাভোকাডো এবং আমের সসের মতো ভিন্ন স্বাদ চেখে নিতেও আগ্রহী।

ঘরে পাস্তা বানাবেন যেভাবে
খুব সহজে ঘরেই বানিয়ে ফেলা যায় পাস্তা।

উপকরণ
২ কাপ ময়দা, ৬টি ডিম, ৪ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি
প্রথমে চালনি দিয়ে ময়দা চেলে নিন। একটি পাত্রে ময়দা ঢেলে নিন। খুব ভালো করে ময়ান করা হয়ে গেলে ডো-কে দুই ভাগে ভাগ করে বলের মতো আকৃতি দিয়ে রাখুন। এরপর ৫ মিনিট রেখে দিন ডোগুলো। এরপর রুটি বেলার পিঁড়িতে সামান্য শুকনা ময়দা ছিটিয়ে পাতলা করে বেলে নিন। এরপর পাস্তা কাটার, পিৎজা কাটার বা ছুরি দিয়ে পছন্দমতো আকৃতিতে কেটে নিন পাস্তা। আপনার পাস্তা এবার রান্না করার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেল। এখন চুলায় গরম পানিতে পরিমাণমতো লবণ দিন। ফুটন্ত লবণ পানিতে মাত্র ৪-৫ মিনিট রাখলেই পাস্তা সেদ্ধ হয়ে যাবে ভালোভাবে। এরপর পছন্দের চিজ, মসলা ও সস দিয়ে স্বাদমতো বানিয়ে পরিবেশন করুন ঘরে বানানো সুস্বাদু পাস্তা। ঘরে তৈরি পাস্তা ৩-৪ ঘণ্টা শুকিয়ে এয়ারটাইট বয়ামে ভরে ফ্রিজে রাখলে ৪ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে। এ ছাড়া সেদ্ধ করে বক্সে ভরে ফ্রিজে রাখলেও কয়েক দিন ভালো থাকে এই পাস্তা।

সহজ রেসিপিতে পাস্তা দিবস উদ্‌যাপন করুন
বারবিকিউ স্প্যাগেটি
উপকরণ
স্প্যাগেটি ৫০০ গ্রাম, মুরগির মাংস কিউব ১ কাপ, টমেটো সস আধা কাপ, বারবিকিউ সস ২ টেবিল চামচ, হট চিলি সস ২ টেবিল চামচ, ওয়েস্টার সস ১ টেবিল চামচ, রসুনকুচি ১ টেবিল চামচ, বাটার ২ টেবিল চামচ, ক্যাপসিকাম স্লাইস আধা কাপ, রোস্টেড কাজুবাদাম আধা কাপ, কাঁচা মরিচ ৫-৬টি, ফ্রেশ ক্রিম ১-২ টেবিল চামচ এবং লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি
স্প্যাগেটি সেদ্ধ করে নিতে হবে লবণ ও তেল দিয়ে। প্যানে বাটার দিয়ে রসুনকুচি ভেজে মুরগি দিয়ে দিন। মুরগি রান্না হলে একে একে সব সস দিয়ে রান্না করুন। তারপর স্প্যাগেটিসহ বাকি সব উপকরণ দিয়ে দিন। এরপর ওপরে রোস্টেড বাদাম ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

হোয়াইট সস পাস্তা
উপকরণ
সেদ্ধ পাস্তা ৫০০ গ্রাম, লাল ক্যাপসিকামকুচি ২টি, সুইট কর্ন ১ কাপ, মাখন ১ টেবিল চামচ, দুধ ২ কাপ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, সবুজ ১টি বড় ক্যাপসিকামকুচি, কর্নফ্লাওয়ার ২ চা-চামচ, ব্রকলি ২৫০ গ্রাম সেদ্ধ, রসুনকুচি ৪ কোয়া, গোলমরিচগুঁড়া ২ চিমটি, পানি ও তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি
প্রথমে প্যান চুলায় বসিয়ে তেল গরম করে নিন। তারপর একে একে সুইট কর্ন, ব্রকলি, সবুজ ও লাল ক্যাপসিকাম হালকা ভেজে নিন। এরপর পানি দিয়ে আধা চা-চামচ লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে দিন। সবজিগুলো সামান্য সেদ্ধ করে নিন। এবার আরেকটি প্যানে পানি গরম করে পাস্তা সেদ্ধ করুন। সামান্য লবণও মিশিয়ে দিন। সাদা সস তৈরির জন্য হালকা আঁচে প্যান বসিয়ে মাখন গলিয়ে নিন। এর মধ্যে গ্রেট করা রসুন দিয়ে এক মিনিট ভাজুন। তারপর আবার কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে খুব ভালোভাবে রান্না করে নিন।
ঢাকায় পাস্তা খেতে কোথায় যাবেন: ঢাকার পিৎজা ইন, লা মেরিডিয়ান, পিৎজা হাট, আলফ্রেস্কো, শর্মা হাউস, ক্যাফে অ্যাপেলিয়ানো, গ্লোরিয়া জিনসে বিভিন্ন ধরনের পাস্তা পাওয়া যায়।

সূত্র: নিউজ নাইন লাইভ ও অন্যান্য

রসুন দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার সহজ ৫ উপায়

সুজির রসবড়া

শিরায় ভেজা পাকন পিঠা

মালাই ভাপা

যত্নে করুন গুড়ের পিঠা-পায়েস

ঐতিহ্যবাহী যেসব খাবার দিয়ে বড়দিন উদ্‌যাপন করে এই ৭ দেশ

বড়দিনের আয়োজনে

বাটা মসলায় নতুন আলু দিয়ে মুরগির মাংস

জলপাইয়ের আচার

শীতে রান্না হোক কাশ্মীরি গোস্তাবা

সেকশন