Ajker Patrika
হোম > জীবনধারা > ভ্রমণ

তেঁতুলিয়া থেকে মোহনীয় রূপে ধরা দিল বরফের চাদরে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা

সাদ্দাম হো‌সেন, পঞ্চগড় থেকে

তেঁতুলিয়া থেকে মোহনীয় রূপে ধরা দিল বরফের চাদরে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলোর মহানন্দা নদীর পাড় থেকে এভাবেই দেখা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। ছবি: এম মোবারক হোসাইন

হেম‌ন্তের মেঘমুক্ত আকাশে মোহনীয় রূপে ধরা দিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। আকাশ পরিষ্কার হতেই উঁকি দেয় বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম এ পর্বত শৃঙ্গ। মেঘ-কুয়াশার চাদর সরে সূর্যের আলোক ছটায় হেসে ওঠে কাঞ্চনজঙ্ঘা। খালি চোখে সেই অপার সৌন্দর্য দেখতে এখন অনেকেই ছুটে যাচ্ছেন উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।

উপ‌জেলা প্রশাসন জা‌নি‌য়ে‌ছেন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় থাকায় হোটেল-মোটেল গু‌লো‌তে দেখা দি‌য়ে‌ছে জায়গা সংকট। ত‌বে পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিশ্চিতে নেওয়া হ‌য়ে‌ছে বি‌ভিন্ন ব‌্যবস্থা।

আজ বুধবার সকালের সূর্যের আলোয় প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের মুগ্ধ করে কাঞ্চনজঙ্ঘা। উপস্থিত অনেকেই বলেছেন এ বছ‌রে প্রথমবারের মতো এত স্পষ্ট ও ঝলমলে চেহারায় দেখা দিয়েছে বরফের চাদরে আবৃত পাহাড়টি।

স্থানীয়রা জানান, আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে প্রতি বছর অক্টোবর ও ন‌ভেম্বরে কাঞ্চনজঙ্ঘার মোহনীয় রূপের দেখা মে‌লে । তেঁতুলিয়ার ঐতিহ্যবাহী ডাকবাংলো খানিকটা উঁচু এলাকায় অবস্থিত। সে কারণে সূর্যোদয়ের সময় এখান থেকে দেড় শ কিলোমিটার দূরে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বত দেখা যায় স্পষ্ট। এই ডাকবাংলো ঘেঁষেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বয়ে চলে‌ছে মহানন্দা নদী। ত‌বে বেলা বাড়ার সঙ্গে বাড়ে রোদের তেজও। আর ক্রমেই মিলিয়ে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। সূর্যাস্তের কিছুটা আগে আবার দেখা যায় ওই পর্বতচূড়া। পর্বত চূড়াটির কিছু অংশ ভারতের সিকিম ও কিছু অংশ নেপালে অবস্থিত।

তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলোতে গিয়ে দেখা যায়, ভোরের সূর্য ওঠার আগেই সৌন্দর্য প্রেমিকেরা ভিড় জমিয়েছেন মহানন্দা নদীর পাড়ের ডাকবাংলোটিতে। সবাই অধীর হয়ে খুঁজছে রূপের রানি কাঞ্চনজঙ্ঘাকে ‌। কেউ কেউ একটি বার কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখতে রাত্রিযাপনও করেছেন এখানে। সকা‌লের যখন বরফের শুভ্র মুকুট মাথায় চাপিয়ে সূর্যের প্রথম কিরণ মেখে ঝলমল করে ওঠে কাঞ্চনজঙ্ঘা, তখন ঘটে প্রতীক্ষার অবসান । সেই দৃশ্য মোবাইল ও ক্যামেরা বন্দী করেন পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই কাঞ্চনজঙ্ঘার মোহনীয় রূপ দেখতে পেরে খুশি প্রকৃতিপ্রেমীরা। বগুড়া থেকে তেঁতুলিয়ায় বেড়াতে আসা সাজ্জাদ হায়দার শাহীন বলেন, এত দিন শুধু শুনেছি পঞ্চগড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। এবার নিজের চোখে দেখে বিস্মিত হলাম। সত্যিই কাঞ্চনজঙ্ঘার এ দৃশ্য মনোমুগ্ধকর।

বাড়ির পাশেই যেন কাঞ্চনজঙ্ঘা। তেঁতুলিয়া থেকে মোহনীয় রূপে ধরা দিয়েছে বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম পর্বত চূড়াটি। ছবি: এম মোবারক হোসাইন
বাড়ির পাশেই যেন কাঞ্চনজঙ্ঘা। তেঁতুলিয়া থেকে মোহনীয় রূপে ধরা দিয়েছে বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম পর্বত চূড়াটি। ছবি: এম মোবারক হোসাইন

রংপুর থে‌কে প‌রিবারসহ কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখ‌তে এসে‌ স্কুলশিক্ষক হা‌ফিজুল ইসলাম ব‌লেন, ক‌য়েকবার ভার‌তে গি‌য়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে এসে‌ছি, এখন বাংলাদেশ থেকেও সবুজ প্রকৃতি আর কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে পাচ্ছি।

শুধু কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শনই নয়, ভ্রমণপিপাসু মানুষ ঠিক যা যা খোঁজেন, তার সবই রয়েছে এখানে। সমতলের চা বাগান, মহারাজার দিঘি, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, মির্জাপুর শাহি মসজিদ, রকস মিউজিয়াম, গোলকধাম মন্দির, মহানন্দায় নদীসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ জেলায় ঘুরতে পে‌রে খু‌শি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা।

এ ছাড়াও পর্যটকেরা উপভোগ করছেন আগাম শীত। সন্ধ্যা নামার আগে তেঁতুলিয়ার মহানন্দার তীরে যেমন ভিন্নরূপের কাঞ্চনজঙ্ঘা হৃদয় কাড়ে, তেমনি হিমালয় থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা বাতাস দোলা দিয়ে যায় পর্যটকদের ম‌নে। এখা‌নে পর্যটকদের থাকার জন্য রয়েছে ডাকবাংলো এবং হোটেলও।

তেঁতুলিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি বলেন, ‘আজ‌ই প্রথম পুর্ণরু‌পে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা গি‌য়েছে। এর আগে দেখা গে‌লেও এতটা স্পষ্ট দেখা য‌ায়‌নি। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাওয়ার পর উপ‌জেলা প্রশাসনের পক্ষ থে‌কে প্রচারণাও চালা‌নো হ‌য়ে‌ছে।’

পর্যটকদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে ইউএনও ব‌লেন, গত ক‌য়েক বছর ধ‌রে তেঁতুলিয়া পর্যটনের এক‌টি হটস্পট  হ‌য়ে উঠেছে। পর্যটন স্পটগুলো নিরাপদ ও ঝামেলাবিহীন করার পাশাপাশি ভ্রমণপিপাসুদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রমজানে ভ্রমণে যে বিষয় মেনে চলা জরুরি

আশা বাঁচিয়ে রেখেছে অক্ষত রিসোর্টগুলো

ঈদে ঘুরে আসুন জাফলং

বিশ্বের প্রথম এআই-চালিত হোটেল ‘অটোনোমাস’

চীনে চিকিৎসা ভিসা এক দিনে

বিশ্বের সেরা ১০ সমুদ্রসৈকত

ভিয়েতনামে চোখধাঁধানো পর্যটনের হাতছানি

পাহাড় খোদাই করে সৌদি আরবের ডেজার্ট রক রিসোর্ট

বইমেলায় ভ্রমণবিষয়ক বই

ক্যারি অন লাগেজে কী নেবেন