ইয়াসির আরাফাত
ধু ধু বালুর মরুভূমি, উট, খেজুরগাছ আর মাথায় টয়া বাঁধা জোব্বা পরা মানুষ, গড়পড়তা বাঙালির কাছে এই হলো সৌদি আরব। কিন্তু বিশ্ব মানচিত্রের একটি হিডেন জেম এই দেশ। এখানে আসার আগে আমি ধারণা করে এসেছিলাম যে দেশটি অনেক সুন্দর হবে। তাই বলে এতটা সুন্দর, সেটা কল্পনা করতে পারিনি।
বাংলাদেশের মানুষ সৌদি আরব বলতে শুধু ‘পবিত্র ভূমি’তে প্রবাসী বাঙালি আর মরুভূমির কথাই চিন্তা করে থাকে। কিন্তু দেশটি যে প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিকভাবে কতটা সুন্দর, সেই ধারণা খুব কম মানুষের রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা সেখানে যান, তাঁরা হয় ওমরাহ অথবা হজ করতে জন্য যান। আর হজ বা ওমরাহ করেই দেশে ফিরে আসেন। অথবা যাঁরা রুটিরুজির সন্ধানে সৌদি আরবে যান, তাঁদের বেশির ভাগ ব্যস্ত থাকেন কাজে। ফলে তাঁদের ভ্রমণের সময় হয় না। হলেও তা সীমিত। ফলে বাংলাদেশের মানুষের কাছে সৌদি আরবের সৌন্দর্যের অনেকটাই অপরিচিত থেকে গেছে। এ ছাড়া অবশ্য সৌদি আরব নিজেই দেশটির সৌন্দর্যের কথা পৃথিবীর কাছে তুলে ধরেনি এত দিন। কিন্তু এখন সেটা করছে। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সৌদি আরবকে চমৎকারভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।
দেশটির প্রতিটি জায়গা পর্যটকবান্ধব ও গোছানো। উন্নত ও দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো এবং স্থানীয় মানুষের ভদ্রতা ও বিনয় মুগ্ধ করবে আপনাকে। ধর্মীয় রীতি পালনের জন্য, বিশেষ করে ওমরাহ পালনের জন্য আসার সময় কয়েকটা দিন বাড়তি নিয়ে আসুন। তাতেই দেশটির বিশাল এলাকা দেখতে পারবেন।
সৌদি আরবের দর্শনীয় কিছু জায়গা
এলিফ্যান্ট রক
বাতাসের ঘর্ষণে পাথরের শরীর প্রাকৃতিকভাবে ক্ষয় হয়ে তৈরি হয়েছে এলিফ্যান্ট রক নামের এই বিস্ময়। দূর থেকে এটি দেখতে শুঁড়যুক্ত হাতির মতো বলে এর এমন নাম। এটি দেখার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য পর্যটক আসেন সৌদি আরবে। এটি দেশটির আল উলা এলাকায় অবস্থিত। মদিনা থেকে আল উলার দূরত্ব প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। আল উলা পুরোনো শহর থেকে এলিফ্যান্ট রকের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। ১০ মিনিট গাড়ি চালিয়ে যাওয়া
যায় সেখানে।
এটিও বাতাসের ঘর্ষণে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া রক বা পাহাড়। মাটির পাহাড় এখানে ক্ষয় হয়ে আর্চের আকৃতি নিয়েছে বলে এর নাম রেইনবো রক। এটিও দেশটির আল উলা এলাকায় অবস্থিত। আল উলা পুরোনো শহর থেকে এর দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার। গাড়িতে যেতে সময় লাগে ৫০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা।
হেরা, মাদাইন সালেহ
আল উলা অঞ্চলের আরেকটি অসাধারণ দর্শনীয় জায়গা। পুরোনো আরবসভ্যতার নাবাতাইনদের রেখে যাওয়া মাদাইন সালেহ শহরের একটি পাথর। এ ধরনের পাথর কেটে তারা নির্মাণ করত নিজেদের বাড়িঘর।