Ajker Patrika
হোম > জীবনধারা > ভ্রমণ

টয় ট্রেন প্রথম দার্জিলিং পৌঁছে এই দিনে

অনলাইন ডেস্ক

টয় ট্রেন প্রথম দার্জিলিং পৌঁছে এই দিনে

দার্জিলিংয়ে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। তবে এখানে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ টয় ট্রেনে ভ্রমণ। আজকের এই দিনে অর্থাৎ ১৮৮১ সালের ৪ জুলাই শিলিগুড়ি ও দার্জিলিংয়ের মধ্যে প্রথম টয় ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তাই আজ গল্প হবে টয় ট্রেনের। 

দার্জিলিং থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত চলে যাওয়া দুই ফুট চওড়া ন্যারো গেজ লাইন এটি। ১৮৭৯ থেকে ১৮৮১ সালের মধ্যে তৈরি হয় এটি। শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত মোট ৭৮ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের এই ট্রেন। এ ভ্রমণের সময় দুই পাশের পাহাড়, জঙ্গলের অসাধারণ দৃশ্য উপভোগের সুযোগ মিলবে। ক্রমেই পাহাড়ের চড়াই বেয়ে ওপরে ওঠাটাও আনন্দ দেয় রোমাঞ্চপ্রেমীদের। সমুদ্রপৃষ্ঠের মাত্র এক শ মিটার উচ্চতায় যাত্রা শুরু করে ওপরে উঠতে উঠতে এটি যখন দার্জিলিং স্টেশনে পৌঁছে তখন ট্রেনটি দুই হাজার ২০০ মিটার উচ্চতায়।

এবার আরেকটু পেছনে ফেরা যাক। কীভাবে এই টয় ট্রেন চালু হলো তা বরং জেনে নিই। এর মূলে আছে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের এজেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন প্রেস্টিজ। তাঁর প্রস্তাবেই শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত রেললাইন তৈরি শুরু হয় ১৮৭৯ সালে।

পাহাড়ি পথে চড়াই-উতরাইয়ের ঝামেলা কমানোর জন্য রেলপথে সাধারণত সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়। আশ্চর্যজনক হলেও এই রেলপথে সুড়ঙ্গে নেই।  এ ক্ষেত্রেও কাজ করে প্রেস্টিজের বুদ্ধি। দুরারোহ পাহাড় বেয়ে আগু-পিছু করে চলার বিশেষ পদ্ধতিকে বলে ‘জেড রিভার্সিং’। ইংরেজি জেড অক্ষরের মতো ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে রেললাইন পেতে কঠিন পথটি সহজ করা হয়। লুপ ও জেড রিভার্সিং ব্যবহার করে ওপরে উঠেছে এই রেলপথ। 

একটি লুপ অতিক্রম করছে টয় ট্রেন। ১৯২১ সালের কোনো এক দিন। ছবি: উইকিপিডিয়া১৮৮০ সালের মার্চে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম যাত্রা শুরু করে টয় ট্রেন। এতে ছিলেন ভাইসরয় লর্ড লিটন। ওই বছর শিলিগুড়ি থেকে কার্শিয়াং পর্যন্ত রেলপথ খুলে দেওয়া হয়। টয় ট্রেন দার্জিলিং পর্যন্ত প্রথম যাত্রা করে ১৮৮১ সালের ৪ জুলাই। পরের বছর অর্থাৎ ১৮৮৫ সালের অক্টোবরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টয় ট্রেনে চেপে যান দার্জিলিং।

১৯৯৯ সালে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে ইউনেসকো। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিংয়ের মাঝখানে ১১টি স্টেশন পড়ে। এগুলো হলো শিলিগুড়ি শহর, শিলিগুড়ি জংশন, শুকনা, রংতং, তিনধারিয়া, গয়াবাড়ি, মহানদী, কার্শিয়াং, তাং, সোনাদা, ঘুম এবং দার্জিলিং।

রেললাইন ধরে চলছে একটি টয় ট্রেন, পাশের রাস্তা ধরে গরুর গাড়ি। ১৯৩০ সালের তোলা। ছবি: উইকিপিডিয়াদার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের সদরদপ্তর কার্শিয়াং নামের ছিমছাম এক পাহাড়ি শহর। দার্জিলিংয়ের ঠিক আগে যে স্টেশনে টয় ট্রেন থামে সেটি ঘুম। ভারতের উচ্চতম রেলস্টেশন হলো ঘুম। এই রেলস্টেশনে নিচে দারুণ একটি জায়গা আছে, সেটি বাতাসিয়া লুপ। বেশ অনেকটা ঢাল বেয়ে নেমে বিখ্যাত টয় ট্রেন চক্রাকার একটি পথে ঘুরে বলে এই নাম। ট্রেনে যদিও নাও চড়েন এই জায়গাটিতে বেড়াতে এসে এখান থেকে ট্রেনের কুউউ ঝিক ঝিক শব্দে চলা দেখা ভারি আনন্দময় অভিজ্ঞতা। 

এখন কিন্তু দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের টয় ট্রেন টানবার জন্য ঐতিহ্যবাহী বাষ্পীয় ইঞ্জিনের পাশাপাশি আছে ডিজেল ইঞ্জিনও। শিলিগুড়ি-দার্জিলিং ভ্রমণে আশা করি পাহাড়-অরণ্য দেখতে দেখতে টয় ট্রেনে রোমাঞ্চকর ভ্রমণের সুযোগটা হাতছাড়া করবেন না। 

সূত্র: উইকিপিডিয়া, কালচার ট্রিপ, আনন্দবাজার

ঈদে ঘুরে আসুন গাজীপুর সাফারি পার্ক

জেদ্দার আল-বালাদ: ইতিহাসের শহরে একদিন

বিদেশি পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলছে উত্তর কোরিয়া

এশিয়ার জেন-জির ভ্রমণপ্রবণতা

রমজানে ভ্রমণে যে বিষয় মেনে চলা জরুরি

আশা বাঁচিয়ে রেখেছে অক্ষত রিসোর্টগুলো

ঈদে ঘুরে আসুন জাফলং

বিশ্বের প্রথম এআই-চালিত হোটেল ‘অটোনোমাস’

চীনে চিকিৎসা ভিসা এক দিনে

বিশ্বের সেরা ১০ সমুদ্রসৈকত