সাজ্জাদ মাহমুদ খান
ঢাকা: বাংলাদেশের মানুষ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীল। মানুষের আবেগ ও সহানুভূতিতে পুঁজি করে প্রতারণায় মেতেছে কিছু অসাধু। তারা ফিলিস্তিনিদের সাহায্যের কথা বলে সেই দেশের রাষ্ট্রদূতের ভিডিও এর নিচে নিজেদের মোবাইল নম্বর জুড়ে দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এমন কয়েকটি প্রতারক চক্রকে ইতিমধ্যে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) উপকমিশনার মশিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সাহায্যের আবেদন ইউটিউব থেকে ডাউনলোড করে বিভিন্ন চক্র। তারপর সেই ভিডিওতে নিজের মোবাইল নম্বর জুড়ে দেন। কয়েকটি ভুয়া আইডি খুলে সেই ভিডিও দিয়ে ফিলিস্তিনের অসহায় মানুষের জন্য সাহায্যের আবেদন করেন। সাধারণ মানুষ সরল বিশ্বাসে সেই মোবাইল নম্বরে বিকাশসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা পাঠায়। কিন্তু তাঁরা জানতেও পারে না প্রতারক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন কয়েকটি চক্রকে আমরা শনাক্ত করেছি। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রতারক চক্রের এক হোতার নাম ইয়াসির আরাফাত। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর। দিনাজপুর সরকারি কলেজে পড়ালেখা করেন। তিনি অনেকগুলো ভুয়া আইডি খুলে ফিলিস্তিনিদের সাহায্যের নামে টাকা আত্মাসাৎ করেছেন। এর মধ্যে তাঁর ফেসবুক আইডি শনাক্ত হয়েছে। যে আইডিতে তার নাম লেখা হয়েছে আবদুল্লাহ আল ফয়সাল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে সেই আইডিতে নিজের পরিচয় দিয়েছে ইয়াসির। তাঁর একটি আইডি থেকে সাহায্যের নামে প্রায় এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রতারণার শিকার সাদ্দাম হোসেন নামে এক ব্যক্তি জানান, একটি বেসরকারি টেলিভিশনের লোগোসহ ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সাহায্য চাওয়ার একটি ভিডিও আবদুল্লাহ আল ফয়সালের আইডিতে দেখতে পান। সেখানে পাঁচটি মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়। এর মধ্যে তিনটি বিকাশ নম্বর ও দুইটি রকেট নম্বর। ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণের প্রতি ভালোবাসা থেকে আমি একটি বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠাই। পরে খোঁজ নিয়ে বুঝতে পারি ভুয়া নম্বরে টাকা পাঠিয়েছি। সাদ্দামের মতো প্রতারণার শিকার হয়েছেন রাব্বি, আলমগীর, মেহেদী আনিস, সোহাগসহ অনেকেই।
পুলিশ বলছেন, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের জনগণের কাছে সাহায্যে আবেদন করেন। সেই আবেদন বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচার হয়। সেখানে সাহায্য পাঠানোর জন্য ফিলিস্তিনি দূতাবাসের মোবাইল নম্বর ছিল। ভিডিও এর সেই মোবাইল নম্বর মুছে প্রতারক চক্র নিজেদের মোবাইল নম্বর জুড়ে দেন। তারপর ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেন। মানুষ সরল বিশ্বাসে সেই প্রতারক চক্রের নম্বরে টাকা পাঠায়।