ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও ডাকাতির অভিযোগে কলকাতা থেকে আওয়ামী লীগের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে মেঘালয় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার কলকাতা পুলিশের সহায়তায় নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাট থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ, ডাকাতি, মহাসড়কে দস্যুতা, সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট করা এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের অভিযোগ রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য স্টেটসম্যানের এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতে পালিয়ে যান সিলেট আওয়ামী লীগের ওই নেতারা।
মেঘালয়ের পশ্চিম জৈন্তিয়া পাহাড়, জোওয়াই পুলিশ সুপার শ্রী চেমফাং সিরতি বলেন, ‘গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে কোনো ধর্ষণ মামলা হয়নি। ফরেনার্স অ্যাক্ট ও অ্যাসল্টে নথিভুক্ত একটি মামলায় পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বৈধ কাগজপত্র ছিল না, তাই ভারতে অবৈধ প্রবেশের অভিযোগ আটক করা হয়েছিল। এর মধ্যে একজনের বৈধ কাগজপত্র থাকায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
গ্রেপ্তারেরা হলেন—সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সিলেট মহানগর যুবলীগের সহ–সভাপতি আবদুল লতিফ রিপন এবং আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ইলিয়াস আহমেদ জুয়েল।
পুলিশ জানায়, মেঘালয়ে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য ট্রানজিট রিমান্ড নিতে তাঁদের বারাসাত আদালতে তোলা হয়। তবে আদালতে ছুটি চলায় তাঁদের বিচারকের সামনে হাজির করা যায়নি। এরপর তাঁদের শিলং নিয়ে যাওয়া হয়।
ছয়জনের নামে মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে মেঘালয় পুলিশ। আটক চারজন ছাড়াও, বাকি দুজন হলেন—সিলেট স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফসার আজিজ ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু। তাঁরা পলাতক রয়েছেন।
কলকাতার ওই ফ্ল্যাট থেকে সুনামগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের একজন কর্মকর্তাকেও আটক করেছিল মেঘালয় পুলিশ। তবে পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গুয়াহাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন জানিয়েছে, মেঘালয় পুলিশ এখনো এ ঘটনার বিষয়ে তাঁদের কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য দেয়নি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁদেরকে মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের ডাউকি থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ, ছিনতাই ও ডাকাতির অভিযোগ আনা হয়েছে।’
বিভিন্ন গণমাধ্যমে অপপ্রচার করা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, সত্য যাচাই না করে বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষের চরিত্র হনন করা অত্যন্ত নিম্ন রুচির পরিচয়। আইনি প্রক্রিয়ায় আশা করি তাঁরা সুবিচার পাবেন। স্থানীয় আদালতে সেখানকার আইনজীবীদের মাধ্যমে তাঁদেরকে আইনি সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’