দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। শুধু আগস্টেই নির্যাতনে শিকার হয়েছে ৩৩২ নারী ও শিশু। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে (আগস্ট ২০২১) এমন তথ্য ওঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক মাসে সংঘটিত ৩৩২টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা রয়েছে ৮১ টি, গণধর্ষণ ১৭ টি, ধর্ষণ ও হত্যা ১ টি, প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৩ জন। এ সময়ে ১৯ জন শিশু-কিশোরীসহ মোট ৫৮ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। অ্যাসিড নিক্ষেপে আক্রান্ত হয়েছে এক শিশু ও দুই কিশোরী। অপহরণের শিকার হয়েছে এক শিশু ও তিন কিশোরী। অন্যদিকে আট শিশু, কিশোরী ও নারী নিখোঁজ হয়েছেন এই সময়ে।
এমএসএফের পর্যবেক্ষণ বলছে, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কারা হেফাজতে মৃত্যু ও সীমান্তে হতাহতের মতো ঘটনাও বন্ধ হয়নি। আগস্টে এ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা বন্দুকযুদ্ধের সাতটি ঘটনা ঘটেছে। সীমান্ত এলাকাগুলোতে সাতটি ঘটনায় ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকালে ছয় নারীসহ ৪৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে বিজিবি আটক করেছে।
সংস্থাটির মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাধীন সাংবাদিকতার ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় এ মাসে ১০টি ঘটনায় সাংবাদিকেরা নানাভাবে হুমকি, হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যা ছিল উদ্বেগজনক। এ সময় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ২১ রাউন্ড রাবার বুলেট, ৫৮ রাউন্ড শটগান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপে অন্তত অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। কারা হেফাজতে এক নারীসহ পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন মনে করে, বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যাপক ব্যবহারে জনমনে নানা উদ্বেগ আর ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এ মাসে ১০টি মামলায় এক সাংবাদিক, এক জনপ্রতিনিধি, চার রাজনৈতিক কর্মী, এক ছাত্র ও তিনজন সাধারণ নাগরিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও এদের মধ্যে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ মাসে বেশ কয়েকটি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা, লুটপাট ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।