নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ইন্টারনেটে শিশুদের ছবি সম্পাদনা করে ব্যবহার করা হচ্ছে পর্নোগ্রাফিতে। গত বছর বাংলাদেশ থেকে এ ধরনের শিশু যৌন নিপীড়ন সম্পর্কিত ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৩৬৮টি প্রতিবেদন পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেনে (এনসিএমইসি)। বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে এ সম্পর্কে যত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে, এর মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘স্টেকহোল্ডার মিটিং টু প্রোমোট চাইল্ড রাইটস অব সেক্সুয়ালি অ্যাবিউজড, এক্সপ্লয়টেড অ্যান্ড ট্রাফিকড চিলড্রেন উইথ মিডিয়া পারসোনেল’ শীর্ষক সভায় এ সব তথ্য জানানো হয়। সেন্টার ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজ (সিডব্লিসিএস) এ সভার আয়োজন করে।
সভায় মূল তথ্য উপস্থাপন করেন সিডব্লিউসিএসের নির্বাহী সদস্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফরিদা ইয়াসমীন। তিনি জানান, এনসিএমইসিতে সন্দেহজনক শিশু যৌন নিপীড়ন সম্পর্কে পুলিশ, বেসরকারি সংস্থা, মানবাধিকার সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগসহ নানা উৎস থেকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। বিভিন্ন দেশ থেকে ২০২৩ সালে মোট ৩ কোটি ২০ লাখ প্রতিবেদন এনসিএমইসিতে গেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এর পরের অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখান থেকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে ১১ লাখ ৩২ হাজারের বেশি। এ ছাড়া থাইল্যান্ড, নাইজেরিয়া, ফ্রান্স ও ডমিনিকান রিপাবলিক রয়েছে যথাক্রমে তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ অবস্থানে।
সভায় জানানো হয়, গত বছর ইন্টারনেট ওয়াচ ফাউন্ডেশন ইন্টারনেট থেকে শিশুর যৌন নিপীড়ন ও হয়রানি সংক্রান্ত ২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫২টি ইউআরএল অপসারণ করার জন্য কাজ করেছে।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৯২ শতাংশ ক্ষেত্রে ছবিগুলো শিশুদের নিজেদেরই তোলা। এর মধ্যে ৫৫ শতাংশ ক্ষেত্রে শিশুদের বয়স ৭ থেকে ১০ বছর।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিডব্লিউসিএসের সভাপতি অধ্যাপক ইশরাত শামীম। তিনি বলেন, ‘শিশুরা যেন নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে, সে দিকে নজর বাড়াতে হবে। ইন্টারনেটে তাদের কোনো সমস্যার কথা অভিভাবকেরা জানতে পারলে, তাদেরই বকে। এ জন্য অনেকেই মা–বাবাকে বলতে ভয় পায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে আইনের কার্যকর ব্যবহারের পাশাপাশি সব পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। অভিভাবকদের শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।’