মনজুরুল ইসলাম, ঢাকা
তৃতীয় টার্মিনাল ঘিরে আন্তর্জাতিক রুটে বাজার বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে চালু হচ্ছে নারিতা রুটের ফ্লাইট। পরিকল্পনায় রয়েছে চেন্নাই, মালেসহ আরো কয়েকটি গন্তব্য। তবে যাত্রীর চাহিদা থাকলেও শিগ্গিরই যেসব গন্তব্যে ফ্লাইট শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না, সেই সব গন্তব্যে অন্য এয়ারলাইনসের সঙ্গে কোড শেয়ার করে নেটওয়ার্ক বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে বিমান।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে জাপানের নারিতা রুটের ফ্লাইট শুরু করছে বিমান। বিমান পরিকল্পনা করছে, একাধিক এয়ারলাইনসের সঙ্গে কোড শেয়ার করে নারিতা হয়ে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে আকাশপথে যুক্ত হওয়ার। এর মাধ্যমে একজন যাত্রী ঢাকা থেকে নারিতা যাবেন বিমানের ফ্লাইটে। পরবর্তীতে অন্য এয়ারলাইনসের মাধ্যমে যাবেন সর্বশেষ গন্তব্যে। অর্থাৎ বিমানের কাছ থেকে টিকিট কিনেই পৌঁছানো যাবে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো গন্তব্যে।
আফ্রিকা ও ইউরোপের বাজার ধরতে এরই মধ্যে গালফ এয়ারের সঙ্গে কোড শেয়ারের বিষয়টি চূড়ান্তও করেছে বিমান। আজ বুধবার ৯ আগস্ট বাহরাইনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এয়ারলাইন গালফ এয়ারের সঙ্গে বিমান কোড শেয়ার চুক্তি করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে এয়ারলাইনটি আফ্রিকা, এশিয়া ও ইউরোপ জুড়ে ২৮টি দেশে ৫৯টি গন্তব্যে বিমানের যাত্রীদের ভ্রমণের সুযোগ পাবেন।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, গালফ এয়ারের সঙ্গে চুক্তির আওতায় বিমান ঢাকা-বাহারাইন রুটে টিকিট বিক্রি করতে পারবে নিজস্ব বিপণন ব্যবস্থায়। এসব যাত্রী গালফ এয়ারের ফ্লাইটে বাহরাইন যাবেন। অন্যদিকে গালফ এয়ারের যাত্রীরা গালফ এয়ারের ফ্লাইটে ঢাকায় হয়ে বিমানের গন্তব্যে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। মুনাফা বিনিময়, টিকিটিং পলিসিসহ নানা দ্বিপাক্ষিক বিষয় থাকবে চুক্তিতে।
বিমান বলছে, গালফ এয়ারের সঙ্গে কোড শেয়ার চুক্তি করলেও এটি চালু হতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে। কারণ দুই এয়ারলাইনসের টিকিট বিক্রির সিস্টেম সমন্বয়, দুই দেশের সিভিল এভিয়েশনের অনুমতিসহ নানান প্রক্রিয়া সম্পন্নের পরই কোড শেয়ার চালু হবে। প্রাথমিকভাবে বিমান ঢাকা-বাহারাইন রুটে যাত্রী পরিবহন করবে গালফ এয়ারের মাধ্যমে। এ ছাড়া গালফ এয়ারের যাত্রীরা বাংলাদেশের অভন্তরীন রুটে বিমানের ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে পারবেন। গালফ এয়ারে ফ্লাইটে যাত্রীরা ঢাকায় এসে বিমানের ফ্লাইটে থাইল্যান্ডে যেতে পারবেন। অন্যান্য গন্তব্য পর্যায়ক্রমে চালু হবে।
উল্লেখ্য, বাহরাইনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট নেই। দীর্ঘ বছর ধরেই বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মী বাহরাইনে কাজ করেন। অন্যদিকে গালফ এয়ার ঢাকা থেকে সপ্তাহে ৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোড শেয়ারের মাধ্যমে বিমান জাপানের নারিতা হয়ে পরোক্ষভাবে যাত্রীদের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং আটলান্টিক উপকূলের লস অ্যাঞ্জেলেসের মতো মার্কিন শহরগুলোতে পৌঁছে দেবে। এই ব্যবস্থায় উপকৃত হবে বিমানের নারিতা রুটও; কারণ ফ্লাইটটি জাপান ও মার্কিন উভয় শহরেই যাত্রী বহন করবে।
শফিউল আজিম বলেন, ‘গালফ এয়ারের সঙ্গে কোড শেয়ার চুক্তি করছে বিমান। এর মাধ্যমে ঢাকা থেকে বাহরাইনে যাত্রী পরিবহনে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে।’