মিয়ানমার জান্তা ও বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের মধ্যে টেকনাফে পানিপথে ৬৫ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। এ সময় টেকনাফ বিজিবি তাঁদের ঠেকিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কোনো ধরনের রোহিঙ্গাকে আর ভেতরে ঢুকতে দেব না।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান তিনি।
নবনিযুক্ত বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার ৬৫ জন রোহিঙ্গা বোটে করে পানিপথ দিয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছেন। সেখানে আমাদের টেকনাফ বিজিবি তাঁদেরকে প্রতিহত করে পুশব্যাক করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা কোনো ধরনের রোহিঙ্গাকে আর ভেতরে ঢুকতে দেব না। এভাবে আমরা দেশের অখণ্ডতা বজায় রেখে সরকারপ্রধানের নির্দেশনায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে।’
বিজিবি প্রধান বলেন, ‘আমরা ধৈর্য ধারণ করে মানবিক দিক থেকে আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা সে রকমই। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী আমাদের ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘সোমবার রাত পর্যন্ত ১১৫ জন বিজিপি, মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং অন্য সদস্যরা আত্মসমর্পণ করে আমাদের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে আরও ১১৪ জন যোগ হয়ে ২২৯ জন ছিল। পরে দুপুরের মধ্যে আরও ৩৫ জন যোগ হয়ে বর্তমানে ২৬৪ জন আছে। এই ২৬৪ জনকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি, তাঁদের খাবারেরও ব্যবস্থা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এদের মধ্যে আহত ছিলেন ১৫ জন। এর মধ্যে ৮ জন একটু আহত ছিলেন। বিজিবির ব্যবস্থাপনায় চারজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আর চারজনকে চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে তাঁদের জীবন রক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ রেখে তাঁদেরকে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি এটি খুব শিগগিরই হবে।’
এর আগে বেলা পৌনে ২টায় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তিনি মন্তব্য বইতে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ জোবায়ের আহমেদ, বিজিবি সদর দপ্তরসহ বিভিন্ন রিজিয়নের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।