হোম > জাতীয়

অবৈধভাবে ইউরোপ যেতে ইতালি প্রথম পছন্দ বাংলাদেশিদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানার গোহালা ইউনিয়নের আমির মিয়া। নয় লাখ টাকা খরচ করে বাংলাদেশ থেকে ইতালি প্রবেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলেন। কিন্তু মানবপাচারকারি চক্রের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় পাড়ি দিতে পারেননি ভূমধ্যসাগর। লিবিয়াতে তাঁকে ছেড়ে চলে যায় পাচারকারিরা। দুই বছর পর আইওএম এর সহায়তায় সেখান থেকে ফেরত আনা হয় তাঁকে। এ ঘটনা বলছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও সেবা বিভাগের এক কূটনৈতিক।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য, আইওএম এর সহায়তায় চলতি বছরেও ১৬০ বাংলাদেশিকে লিবিয়া থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। করোনার সময়ে মোট ফেরত এসেছেন ১ হাজার ৩৭৯ জন বাংলাদেশি। এই মানুষগুলোর বড় অংশই ইউরোপে প্রবেশের সুযোগের অপেক্ষায় থেকে ব্যর্থ হয়ে ফিরেছেন। এদের অনেকেই মানবপাচারকারি চক্রের নির্যাতনের শিকার।

সিরিয়ায় যুদ্ধপরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকেই অভিবাসনের ভয়াবহ চাপ পুরো ইউরোপ জুড়ে। লাখে লাখে মানুষ ভূমধ্য সাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপ প্রবেশ করে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে এ দৌড়ে তাল মিলিয়েছে বাংলাদেশিরাও। করোনার মধ্যে শুধু ইতালিতেই অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে ৫ হাজার ৮০ বাংলাদেশি। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ইতালির সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, যেসব বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয় তাদের সবার লক্ষ্য থাকে ইউরোপ বিশেষ করে ইতালিতে প্রবেশের। ইতালিতে একটি আইন রয়েছে, যে কেউ ১৮ বছরের নিচে হলে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই তিনি তিন মাসের কাজের অনুমতিপত্র পাবেন। তবে সেই মানুষগুলোর বয়স যাচাইয়ের জন্য পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে তাদের বৈধ পাসপোর্ট দেখাতে হয়। এ ক্ষেত্রে এমনও দেখা গেছে ৪০ বছরেরও বাংলাদেশি নিজেকে ১৬-১৭ বছর দাবি করে কাজের অনুমতি পেয়ে যাচ্ছেন। তারপর ফেলে দেন আসল পাসপোর্ট। সেই অনুমতিপত্র দেখিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে বয়স কমিয়ে পাসপোর্টের আবেদন করেন।

ইউএনএইচসিআর ইতালির প্রকাশিত প্রতিবেদন বলা হয়, ২০২১ সালে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি প্রবেশ করে নিজেদের শরণার্থী ঘোষণা করেছেন মোট ৯ হাজার ১৩ জন অধিবাসী। ২০২০ সালের প্রথম চারমাসে ছিল ৩ হাজার ৪৬৫ জনে। চলতি বছর সবচেয়ে বেশি ১৫ শতাংশ আবেদনকারি তিউনেশিয়ার নাগরিক। আর এ সময়ে বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে প্রবেশের হার ১০ শতাংশ। ইতালি প্রবেশের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে আইভরিকোস্ট, ১৩ শতাংশ।

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, গত ছয় বছরে ৩৮ হাজার ৯৯ জন বাংলাদেশি সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। এর মধ্যে ২০১৭ সালে আবেদন করেছেন সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৭৩১ জন।

অবৈধ বা অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার বলে মন্তব্য করেছেন ব্র্যাকের অভিবাসন বিভাগের প্রধান শরিফুল হাসান। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, যখন বাংলাদেশিরা এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে উদ্ধার হয়। তখনই সরকার তৎপর হয় মানবপাচারকারি চক্রের বিরুদ্ধে। সাড়া বছর এ কার্যক্রম চলে না। এমনকি অন্য দেশের সঙ্গে সমন্বয়েরও কোন বালাই নেই।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বয়স কমানো, নিজেকে অন্য দেশের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেওয়াসহ ইতালি প্রবেশের জন্য নানা পন্থা নেন বাংলাদেশিরা। ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্য কী কী ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় তারা নেন, তার ভালো চিত্র মিলবে রাজধানীর গুলশান থানায়। প্রতি মাসেই ভুয়া পরিচয় ও কাগজপত্র জমা দিয়ে ভিসা অবেদনের জন্য একাধিক সাধারণ ডায়েরি করে থাকে ঢাকার ইতালির দূতাবাস। এমনকি বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তির পরিচয় সত্যতা নিয়ে যে পুলিশি যাচাই হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ইতালি দূতাবাস।

সাংবাদিক আনিস আলমগীরের মুক্তি চায় অ্যামনেস্টি

জিয়াউলের বিরুদ্ধে শতাধিক ব্যক্তিকে গুম-খুনের অভিযোগ আমলে নিলেন ট্রাইব্যুনাল

বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে হত্যা করা হয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

৮ ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে অর্ধশতকোটি টাকা লুট

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২ উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি

সৌদি আরবে বিনা অনুমতিতে রাজনৈতিক সভা করায় কয়েকজন বাংলাদেশি আটক, সতর্ক করল দূতাবাস

নিজের বিচার সরাসরি সম্প্রচার চান হাসানুল হক ইনু

২০ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে অমর একুশে বইমেলা

বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে ভারতের ‘নসিহত’ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা