হোম > জাতীয়

১৫ বছরের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে আ.লীগ জড়িত: জ্যোতির্ময় বড়ুয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া । ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেছেন, গত ১০-১৫ বছরে যত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল এবং আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা ছিল।

আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা কমবেশি নিজেদের উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। দেখেছি কীভাবে স্থানীয়রা রাজনৈতিক শক্তিটাকে প্রয়োগ করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কীভাবে তাদের তাঁবেদার হিসেবে রাজনৈতিক শক্তির মতো ব্যবহৃত হয়েছে। কীভাবে মানুষজনকে হয়রানি করেছে, নিপীড়ন ও হত্যা করেছে। কখনো কখনো ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে। এগুলোর কোনোটারই কিন্তু বিচার হয়নি।’

ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি ও বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক ‘সত্য, ন্যায় ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, রামুর ঘটনায় ১৯টি মামলা হয়েছিল। একটির বাদী পরবর্তী সময়ে মামলা উত্তোলন করে নিয়েছিলেন। ১৮টি মামলা এখনো চলমান। ২০১২ সালের ওই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর আদালত বলেছেন, কিছু হয়নি। অধিকতর তদন্ত লাগবে। পরে বিচারিক তদন্তে ১৯৮ জনের নাম এসেছিল; যাঁদের প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে হয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ, না হয় যুবলীগ, না হয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। বিচারিক তদন্ত প্রতিবেদন কোর্টে দাখিল হলেও প্রকাশ হয়নি। রিট এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। রামুর ঘটনার এখনো বিচার হয়নি। গত ১৫ বছরে এ রকম অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল।

জুলাই-আগস্টের বিচার নিয়ে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ফৌজদারি মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া বিচার করা যায় না। অথচ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এখনো জুলাই-আগস্টের ঘটনার সাক্ষ্যপ্রমাণ সংরক্ষণে উদ্যোগ নেয়নি।

ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, ‘আগস্ট মাসের গণহত্যা নিয়ে কথা বলছি। কিন্তু গত ১৫ বছরে গুম-খুনের পাশাপাশি আরও মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। গণগ্রেপ্তার, গণ-আটক, থানায় এমনকি কারাগারে নির্যাতন হয়েছে। হয়রানি একটা দৈনন্দিন এবং স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ট্যাক্স ফাইল নিয়ে টানাটানি করা, সম্পত্তি নিয়ে সমস্যায় ফেলা, চাকরি নিয়ে ঝামেলায় ফেলা এমনকি সামাজিক হয়রানিও হয়েছে।’

সারা হোসেন বলেন, ‘বাক্‌স্বাধীনতা নিয়ে আমরা গত পাঁচ মাসে অনেক কথা বলেছি। এখন বলতে পারছি। কিন্তু কীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হলো? সব তো ডিজিএফআই বা এনএসআই দিয়ে করানো হয়নি। অন্যরাও করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘একটি গোষ্ঠী দেশের ভেতরে-বাইরে বিশেষ করে অনলাইনে সারাক্ষণ একটা অস্বীকারের মধ্যে আছে যে কোনো কিছু ঘটেনি। সবাই নিজেদের খুন করেছে। আশা করছি, তারা যদি একটু চুপ করে অন্তত স্বীকার করে।’

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া । ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখনো স্বীকার করছে না। আওয়ামী লীগের অনেকে এখনো ডিনাইয়ের মধ্যে আছে। কী পরিমাণ ক্রাইম (অপরাধ) তারা করেছে। কিন্তু আমি নিশ্চিত, বাংলাদেশের সোসাইটি ও তরুণ প্রজন্ম একটা রিকন্সিলিয়েশনের জায়গায় যাবে। আওয়ামী লীগ বলছে, হাজার হাজার পুলিশ মারা গেছে। আমরা ৪৪ জনের নাম দিয়ে দিয়েছি। এর বেশি কেউ পেলে আমাদের দেখান। আওয়ামী লীগ তো তার ন্যারেটিভ দিচ্ছে। তারা মনে করছে, এই সরকার অজনপ্রিয় হয়ে গেলে তার ন্যারেটিভ ইম্পোজ করবে।’

শফিকুল আলম বলেন, ‘এবারের যে আন্দোলন, বাংলাদেশের সোসাইটির যে ম্যাচিউরিটি, এটা অবিশ্বাস্য। ৫ আগস্টের পরে সাত-আট দিন পুলিশ ছিল না। এই সোসাইটির তো প্রতিটি ঘরে হানাহানি হওয়ার কথা ছিল। ১৫ থেকে ২০ হাজার লোককে যদি মেরে ফেলা হতো, তাহলে আমাদের সোসাইটি, জাতি ড্যামেজ হয়ে যেত। গণ-অভ্যুত্থানে আমাদের অনেক ম্যাচিউরিটি এসেছে। আমাদের সংবাদপত্র উন্নত হয়েছে। আমাদের সত্য অন্বেষণের জন্য জায়গাটা উন্নত হয়েছে।’

নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনিম খলিল বলেন, আয়নাঘরের মূল তত্ত্বাবধায়কদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে পরোয়ানা জারি হলেও কেউ গ্রেপ্তার হননি। বেশির ভাগ ক্যান্টনমেন্টে বসে আছে। কেন? র‍্যাবের ডিজি বলেছে, র‍্যাবে আয়নাঘর ছিল। ডিজিএফআই কেন বলে না?

তাসনিম খলিল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত। এই ট্রাইব্যুনালের ইতিহাস আছে, এখানে কীভাবে মানুষকে একটার পর একটা ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। সুখরঞ্জন বালি নামের একজন সাক্ষীকে ট্রাইব্যুনালের সামনে থেকে অপহরণ করে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যে আদালতে এসব তামাশা হলো এতগুলো বছর ধরে, এই কোর্টেই আপনারা আরেকটি বিচার করবেন? সরকারের পক্ষ থেকে জবাব দিতে হবে আমাদের।’

তাসনিম খলিল বলেন, এই ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করার একটি হাতিয়ার ছিল না? বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একজন প্রসিকিউটর আছেন, তাঁর বিরুদ্ধে শক্ত অভিযোগ রয়েছে। এতগুলো বছর র‍্যাব, ডিজিএফআই, সিটিটিসিকে সাহায্য করেছেন মানুষকে গুম করতে, তুলে নিয়ে আসতে, অপহরণ করতে, খুন করতে। তিনি কীভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর?

বদলি ঠেকাতে আদালতে মাদক নিয়ন্ত্রণের এডি

অবৈধ বিদেশিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে টাস্কফোর্স

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ভাবনা

প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে চাপে আছে সরকার: আইসিজির প্রতিবেদন

প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহির জন্য আস্থা ভোটের সুপারিশ

জনগণের সুরক্ষা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব: পরিবেশ উপদেষ্টা

নারী সাংবাদিককে প্রবেশে বাধা দেওয়ার বিষয়ে যা বলল ধর্ম মন্ত্রণালয়

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা: গ্রেপ্তার নিয়ে পুলিশের অসহযোগিতায় ট্রাইব্যুনালের অসন্তোষ

বাংলাদেশে সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি জাপানের

১৪ ফেব্রুয়ারি রাত শবে বরাত

সেকশন