নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
‘কোনো লোক বিনা বিচারে মারা যাক এটা আমরা চাই না’ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। কারা হেফাজতে বিএনপির ১৩ নেতা-কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় করা রিটের শুনানিতে আজ মঙ্গলবার এমন মন্তব্য করেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের বেঞ্চ। পরে ১৩ নেতা-কর্মীর মৃত্যুর কারণ জানতে কারা কর্তৃপক্ষের নিকট করা আবেদন ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আদালত।
কারা হেফাজতে বিএনপির ১৩ নেতা-কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় আন্তর্জাতিক মানের তদন্ত ও তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রিটটি করা হয়। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, ‘নির্যাতন হলে সে বিষয়ে তো আইন আছে।’
কায়সার কামাল বলেন, ‘আমি নির্যাতন বলছি না।’
আদালত জানতে চান, ‘কোথায় মারা গেছে।’
জবাবে কায়সার কামাল বলেন, ‘কেউ হাসপাতালে, কেউ কারাগারে। এটা অস্বাভাবিক মৃত্যু।’
আদালত বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম পোস্টমর্টেম রিপোর্টগুলো নিতে।’
কায়সার কামাল বলেন, ‘আমরা আবেদন করেছিলাম। কেবল রংপুরের একজনের বিষয়ে জবাব এসেছে। বলেছে-পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। বাকিগুলোর জবাবই দেওয়া হয়নি।’
হাইকোর্ট বলেন, ‘মারা যাওয়ার পর কোথাও আপনারা একটি জিডিও করেননি। কোনো ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক জিডি বা মামলা করতে হবে। থানায় মামলা না নিলে আদালতে যেতে হবে। কোনো লোক বিনা বিচারে মারা যাক, এটা আমরা চাই না। যার যায় সে বোঝে। আমরা কোনো রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখব না। আপনারা কোনো পদক্ষেপ নেন না। কোনো অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলাও করেননি। পরিবারের কেউ তো কোনো কথা বলছে না। আগে জিডি করে আসেন।
কায়সার কামাল বলেন, ‘এসব ঘটনায় পরিবার জর্জরিত।’
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘তাঁরা তো জিডি করে আসেননি। পরিবার তো আসছে না।’
আদালত বলেন, ‘আপনারা যথাযথ ফোরাম হয়ে আসেন।’ পরে আদালত কারা কর্তৃপক্ষের নিকট করা আবেদন ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।