থাইল্যান্ড সফররত বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ড. ইউনূস দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার কাছে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ জানিয়েছেন। আজ শুক্রবার ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে তিনি এই অনুরোধ জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ঢাকায় থাই দূতাবাসের সক্ষমতা সীমিত হওয়ায় অনেক বাংলাদেশিকে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গমন-ইচ্ছুরা বেশি ভোগান্তিতে পড়েন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গমন-ইচ্ছু বাংলাদেশিরা ভিসা পেতে বড় ধরনের জটিলতার মুখে পড়েন। তিনি এ বিষয়ে থাই প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
জবাবে থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন।
বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য, জাহাজ চলাচল, সামুদ্রিক সম্পর্ক এবং আকাশপথে সংযোগ বাড়ানোর ওপরও জোর দেন অধ্যাপক ইউনুস।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে দুই দেশের ভ্রমণ সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। তিনি এক দশকেরও বেশি আগে চিয়াং মাই ও চট্টগ্রামের মধ্যে চালু হওয়া এয়ার এশিয়ার ফ্লাইটের ফলপ্রসূতার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন।
থাই প্রধানমন্ত্রী বিমসটেকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ায় অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে তাঁর নেতৃত্বে সংস্থাটিতে নতুন গতি সঞ্চার হবে।
বৈঠকের শুরুতে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের দীর্ঘদিনের চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন এবং প্রয়াত রাজা ভূমিবলের প্রতি শ্রদ্ধা জানান, যাঁর নেতৃত্বে ১৯৭২ সালে থাইল্যান্ড স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।
বৈঠকে বিনিয়োগের বিষয়েও আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস আগামী সপ্তাহে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় বিনিয়োগ সম্মেলনে থাই কোম্পানিগুলোকে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানান।
তিনি আরও বলেন, রেল, সড়ক, নৌ ও আকাশপথে সংযোগ উন্নত হলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বহু গুণে বাড়বে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, সুযোগ হলে বাংলাদেশ থাইল্যান্ড-ভারত-মিয়ানমার ত্রিপক্ষীয় মহাসড়ক প্রকল্পেও অংশ নিতে চায়।
তিনি দুই দেশের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে যৌথভাবে একটি ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরুর প্রস্তাব দেন, যেন দ্রুত আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করা যায়।