পার্শ্ববর্তী একটি দেশ এবং এ দেশের কিছু বিশ্বাসঘাতক পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল বলে অভিমত দিয়েছেন সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট তদন্ত আদালতের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন তিনি। বিডিআর বিদ্রোহের কারণ নির্ণয়ে পরিচালিত সেনা তদন্ত ছিল এ সংবাদ সম্মেলনের বিষয়বস্তু।
সংবাদ সম্মেলনে পাঠ করা লিখিত বক্তব্যে প্রচলিত ধারণা খণ্ডন করে মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড কোনো “ডাল–ভাত কর্মসূচি”র বিরোধ বা রেশন বৃদ্ধির দাবি নিয়ে ছিল না। বাংলাদেশকে দুর্বল করতে দেশের কিছু বিশ্বাসঘাতক এবং পাশের একটি দেশের চক্রান্তে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।...আমি চাই সঠিক তদন্ত হোক, দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি হোক।’
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভুক্তভোগী বিজিবি (বিডিআরের বর্তমান নাম) সদস্য ও পরিবারসহ কিছু মহল থেকে এ ঘটনার বিচার নতুন করে করার দাবি উঠেছে।
২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর বাহিনীতে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহ ঘটে। ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া নিহত হন ১৭ জন বেসামরিক ব্যক্তি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীটির সংস্কারের অংশ হিসেবে এর নাম বদলে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বা বিজিবি করা হয়। বদলে যায় ইউনিফর্মও।
সাবেক জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা আবদুল মতিন অভিযোগ করেন, এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড (মূল পরিকল্পনাকারী) ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সুবেদার তোরাব আলী। তিনি ঘটনার দিন প্রতিবেশী একটি দেশে ১১ বার এবং সিঙ্গাপুরে দুবার ফোন করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন উসকানিমূলক তথ্যও প্রচার করা হয়। ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য রাজনীতিক, বেসামরিক ব্যক্তি ও বিডিআর সদস্যরা একাধিক বৈঠক করেন।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও ইসলামী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক আবদুল মতিন অভিযোগ করে বলেন, ‘তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সেখানে গিয়ে নাটক করেছেন, অস্ত্র জমা নিয়েছেন, তবে আটকা পড়া মানুষকে উদ্ধারে ভূমিকা রাখেননি।’