রাজধানীর জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আবদুল মোতালিব নামে এক কিশোর হত্যা মামলায় সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করার আগেই কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে দুই দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষেই দুপুরের পর শাজাহান খানকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানার এসআই মো. খোকন মিয়া তাঁকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান।
অন্যদিকে শাজাহান খানের পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নাকচ করে শাজাহান খানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আইনজীবীরা আদালতকে জানান, শাজাহান খান গুরুতর অসুস্থ। তাঁর হার্টের পাঁচটি ব্লক ধরা পড়েছে। ৯০ শতাংশ ব্লক রয়েছে। হার্টে রিং পরানো হয়েছে। অসুস্থতার কারণে রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাই তাকে জামিন দেওয়া হোক।
পরে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেওয়ার পর আইনজীবীরা তাঁর সুচিকিৎসার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করেন। আদালত কারাবিধি অনুযায়ী শাজাহান খানের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ধানমন্ডি থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মাহফুজ সাবেক এই মন্ত্রীকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৬ সেপ্টেম্বর শাজাহান খানকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ৫ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে শাজাহান খানকে ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিছিলে থাকা আবদুল মোতালিব নামে এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
২৬ আগস্ট তার বাবা আবদুল মতিন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন। প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং শাজাহান খানসহ ১৭৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এজাহারে।
শাজাহান খান মাদারীপুর-২ আসন থেকে টানা অষ্টমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি তিনি। ১৯৮৬ সালে প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাদারীপুর-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন শাজাহান খান।
একই আসন থেকে পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।