কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজের গুরুত্বপূর্ণ কাজ চালিয়ে যেতে মুক্ত থাকতে পারবেন। মুহাম্মদ ইউনূসকে ১৭ আগস্ট লেখা এক চিঠিতে ওবামা এ আশা প্রকাশ করেন।
মুহাম্মদ ইউনূস এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইউনূস সেন্টার আজ রোববার তাদের ফেসবুক পেজে চিঠিটি প্রকাশ করেছে। চিঠিটি প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পর ওবামাকে যুক্ত করে করা এক টুইটে ইউনূস সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
ওবামা চিঠিতে বলেছেন, বহু মানুষ, পরিবার ও সম্প্রদায়কে দ্রারিদ্র্যমুক্ত হতে ইউনূস যেভাবে পথ দেখিয়েছেন, তাতে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
ইউনূসের সঙ্গে ২০০৯ সালে হোয়াইট হাউসে দেখা হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে ওবামা বলেন, ‘ইউনূসের কথা লাখো মানুষকে নিজের সম্ভাবনা অনুধাবনে সক্ষম করে তুলেছে।’
ওবামা বলেন, ‘ইউনূস যাঁদের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করেছেন এবং যাঁরা আরও ন্যায়সংগত ভবিষ্যৎ অর্থনীতির কথা ভাবেন, তাঁরা সবাই এখনকার দিনগুলোয় ইউনূসের পাশে আছেন।’ এই জানা ইউনূসকে শক্তি জোগাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
চিঠির শেষ বাক্যে ওবামা আশা প্রকাশ করেন, ইউনূস নিজের গুরুত্বপূর্ণ কাজ চালিয়ে যেতে মুক্ত থাকতে পারবেন।
আজ এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা সরকারকে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা হলেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, হাফিজ উদ্দিন খান, হামিদা হোসেন, আলী ইমাম মজুমদার, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বদিউল আলম মজুমদার, শাহদীন মালিক, শারমিন মুরশিদ, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আলী রিয়াজ, আসিফ নজরুল, শহিদুল আলম, সি আর আবরার, পারভীন হাসান, ফিরদৌস আজিম, শিরিন হক, রেহনুমা আহমেদ, স্বপন আদনান, শাহনাজ হুদা, নায়লা জেড খান, সুব্রত চৌধুরী, সাদাফ নূর, নোভা আহমেদ প্রমুখ।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমে তাঁর কয়েক সহকর্মীর বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। তাঁর আইনজীবীরা জানান, অভিযোগগুলো দেওয়ানি ধরনের হলেও দায়ের করা হয়েছে ফৌজদারি মামলা।
এই মামলা অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা বর্তমানে লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে বলে বিবৃতিতে তাঁরা উল্লেখ করেন।
ইউনূসকে হয়রানির অভিযোগের ব্যাপারে বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ব্যাংক হিসাব তলব, তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইউনূসকে হয়রানি করছে। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তাঁর বিরুদ্ধে নানা ধরনের বিষোদ্গার অব্যাহত রয়েছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে ফৌজদারি মামলা দায়েরের ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ধারণা করার যুক্তি রয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন।