নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করেছি। এই যাত্রা তবেই সফল হবে যখন আমরা ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষ সবার জন্য ‘এক্সেস টু জাস্টিস’ নিশ্চিত করতে পারব। আইনি প্রক্রিয়ায় সবার অভিগম্যতা ছাড়া ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল’ অর্জন অসম্ভব ব্যাপার। তাই এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমাদের প্রত্যেককেই যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার আইন বিষয়ক উন্নয়নমূলক অনুষ্ঠান ‘প্রমাণিত: অপ্রমাণিত-আইনের সহজপাঠ’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির সহায়তায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এই অনুষ্ঠানের প্রযোজনা করে।
অনুষ্ঠানটি পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেছেন আপিল বিভাগ থেকে অবসর নেওয়া বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ। এটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে ধারাবাহিকভাবে প্রচার করা হবে।
সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ ছাড়া বক্তব্য দেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাইমা হায়দার, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিবৃন্দ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় আইন সহায়তা প্রদান সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আদালতে কোনো কিছু প্রমাণ ও অপ্রমাণের যে যাত্রা—তা অনেক ক্ষেত্রেই সুদীর্ঘ। এই যাত্রাপথে কত মানুষের দীর্ঘশ্বাস, হাহাকার জড়িয়ে রয়েছে তা আমরা অনেকেই হয়তো হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারি না। দেশের মাত্র ২ হাজার বিচারক ৪০ লাখেরও অধিক মামলা নিষ্পত্তির কঠিন দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। তবুও মামলার জট থেকে আমরা পরিত্রাণ পাচ্ছি না। অনেক ক্ষেত্রেই একটি মামলা চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হতে দশ-বারো বছর লেগে যায়। ইতিমধ্যে হয়তো বিচারপ্রার্থী সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছে মামলার খরচ চালাতে গিয়ে। এ সবই আমাদের দেশের বাস্তবতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ কথাও সত্যি, আদালতে এমন অনেক বিষয় নিয়ে মামলা হয়, যা হয়তো মামলা পর্যন্ত গড়াত না, যদি সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের মধ্যে আইনি সচেতনতা থাকত। এমন প্রেক্ষাপটে বিটিভির মতো একটি সুদূর বিস্তৃত প্ল্যাটফর্ম মানুষের মধ্যে আইনি সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিষয়টি নিঃসন্দেহে আশাব্যাঞ্জক।’