আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের দণ্ড (কনভিকশন) কার্যকর থাকবে। কারণ, আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দণ্ড স্থগিতের কোনো বিধান নেই। এটা কেবল আপিল নিষ্পত্তি করে বাতিল বা বহাল বা সংশোধন করা যাবে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড পাওয়া নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের দণ্ড ও সাজার রায় স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ বাতিলের রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের বেঞ্চ গত ১৮ মার্চ ওই রায় দেন। ওই রায়ের ৫০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি আজ বুধবার প্রকাশিত হয়েছে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ চারজনকে গত ১ জানুয়ারি ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তা ৩ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে চারজনকে জামিন দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। অপর তিনজন হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
এদিকে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশের অংশবিশেষের বৈধতা নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। তাতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত ১৮ মার্চ রায় দেওয়া হয়।
হাইকোর্ট রায়ে বলেন, যত দিন পর্যন্ত ড. ইউনূসসহ চারজন জামিনে থাকবেন তত দিন পর্যন্ত সাজা স্থগিত থাকবে। জরিমানাও স্থগিত থাকবে। এ ছাড়া ১ জানুয়ারি ছয় মাসের দণ্ড দিয়ে শ্রম আদালতের দেওয়া আদেশ ও রায় স্থগিত করে ২৮ জানুয়ারি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের স্থগিতাদেশ বাতিল করা হলো। এ ছাড়া ইউনূসসহ চারজনের আপিল যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও টাইটাস হিল্লোল রেমা। ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ–আল–মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।