পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সবার ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে নানাবিধ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিশেষ করে, যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সম্মেলন কক্ষে ঈদযাত্রা নিয়ে আলোচনা সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় সারা দেশে যানজটের ১৫৫টি স্পট নির্ধারণ করা হয়েছে। ঈদের আগে ও পরে এসব স্পট মনিটরিংয়ের আওতায় রাখার কথা বলা হয়। এর মধ্যে আছে—ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ৪৮টি স্পট, ঢাকা-উত্তরবঙ্গের সড়কের ৫২টি স্পট, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের ৬টি স্পট, ঢাকা সিলেট মহাসড়কের ৪১টি স্পট ও ঢাকা-পাটুরিয়া-আরিচা মহাসড়কের ৮টি স্পট।
জাতীয় মহাসড়ক ও করিডরসমূহ—ঢাকা বাইপাস (মদনপুর-ভুলতা-ভোগরা), নবীনগর-চন্দ্রা, ঢাকা-জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ, ঢাকা-জয়দেবপুর, ঢাকা (ভোগরা)-চন্দ্রা-এলেঙ্গা, এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-বগুড়া-রংপুর, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-খুলনা এবং ভাঙা-বরিশাল রুটের মেরামত/সংস্কার কাজ আসন্ন ঈদের সাত দিন পূর্বেই সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, ঈদের আগে ও পরের ৩ দিন মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরি চলাচল বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। ঈদের আগে ৭ দিন ও পরের ৫ দিন সিএনজি ও ফিলিং স্টেশন সার্বক্ষণিক চালু রাখার কথা বলা হয়েছে।
সভায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঈদের পর (সড়কে) নজরদারি বাড়তে হবে।’ তিনি থ্রি-হুইলার যান নিয়ে হাইওয়ে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনার এটা বন্ধ করবেন। কে মানা করে? কে শুনবে না? কোন জনপ্রতিনিধিরা? এ দেশে ভোটের রাজনীতি হয়। অনেকেই ভাবেন, তারা গরিব তাই চালাতে দেয়। কিন্তু জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে জীবন আগে।’
সভায় পুলিশের মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘ঈদ যদি ১১ তারিখ হয় তাহলে ১ দিন বেশি ছুটি দেওয়া যায় কি না সেটি ভাবা উচিত।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিবার গার্মেন্টস ছুটির বিষয়ে বলা হলেও সেটি করা হয় না। এবার সেটি মেনে চললে সুবিধা হবে।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান মহাখালীতে রাস্তায় বাস পার্কিং না করানোর পরামর্শ দেন। এ সময় সড়ক সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ জানান, ঢাকা উত্তর সিটি ও বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে এই বিষয়ে কাজ করার কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য পুলিশের হটলাইন চালুর কথা বলেন।
ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, সড়কে দুর্ঘটনা হলে হাইওয়ে পুলিশ থেকে যেন একটা ব্যবস্থা করা হয়। যারা দুর্ঘটনার স্বীকার হবেন তাদের যেন দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি। জবাবে আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ‘এবার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা করা হবে। টহল টিম বাড়ানো হবে।’