জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জাতীয় সংসদে বলেছেন, ভোটার হওয়া ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে এনআইডি ব্যবহারে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘২০০৭ সালে একটি ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরির জন্য সেনাবাহিনীর অধীনে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। এ প্রকল্পের বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যক্রম শুরু হয়। এটি ছিল সাময়িক পদক্ষেপ। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রমের ব্যাপ্তি অনেক বেড়েছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম শুধু ভোটার বা ১৮ বছরের বেশি নাগরিকের জন্য নয়, বরং সব নাগরিকের জন্য তা প্রাসঙ্গিক।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংক হিসাব খোলা, চাকরির আবেদন, ইউটিলিটি সংযোগ, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীন বিভিন্ন ভাতার আবেদন, খাসজমি প্রাপ্তির আবেদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এনআইডি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে ভোটার হওয়ার বিষয় মাত্র একটি। অন্যান্য ক্ষেত্রে এনআইডি ব্যবহারের বিষয়ে ইসির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রমটি পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নির্বাহী বিভাগের অধীনে হয়ে থাকে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাস্তবতার নিরিখে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এটি নির্বাহী বিভাগের অধীনে হওয়া উচিত। এ কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে আনার কার্যক্রম চলমান।’
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করে দেশের অগ্রগতি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিংয়ের মাধ্যমে দেশ ও সরকার বিভিন্ন বিরোধী কার্যক্রম ঠেকাতে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারে ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স টেকনোলজির মতো আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে একটি ইন্টিগ্রেটেড ল–ফুল ইন্টারসেপশন সিস্টেম চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ঢাকাসহ সারা দেশে মাদকের বিস্তার রোধকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে চুরি, ছিনতাই, মাদক ইত্যাদির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।