দ্রব্যমূল্য ইস্যুতে এবার হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার। যেসব করপোরেট প্রতিষ্ঠান ইচ্ছাকৃতভাবে সিন্ডিকেট করছে, তাদের বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার করার ঘোষণা দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একের পর এক অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আমরা মোকাবিলা করছি। দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। বন্যায় অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে, যে কারণে শাক-সবজির দাম বেশি। কিন্তু অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের একটা বড় প্রভাব আছে।’
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য আমরা কাজ করছি। কিন্তু ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনকে দুর্বল করা হয়েছে। করপোরেটদের সঙ্গে আগের সরকারের যোগাযোগ থাকার কারণে এটাকে এত দুর্বল করা হয়েছে যে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটা প্রতিবেদন আসে যে, অভিযান হলো। সেখানে ৩ হাজার টাকা, ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়—এটা তো ইফেক্টিভ না।’
এখন চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট কারা নিয়ন্ত্রণ করছে—এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আগে যে সিন্ডিকেট ছিল, সেটা আওয়ামী লীগ সরকার নিয়ন্ত্রণ করত। কিন্তু সিন্ডিকেটের ভেতরে তো ব্যবসায়ীরাই বসে ছিলেন। তাঁরা এখনো রয়ে গেছেন। তাঁদের ব্যবসায়িক স্বার্থ বাঁচাতে কোনো কোনো রাজনীতিবিদের সঙ্গে লিয়াজোঁর মাধ্যমে সিন্ডিকেট টিকিয়ে রেখেছেন। সে ক্ষেত্রটা আমরা শনাক্ত করছি। সেটা অ্যাডজাস্ট করার চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘কারাওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, একজন চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করা হলে সেই জায়গায় অন্যজন রিপ্লেস হয়ে যায়। আমরা গোড়াটা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি, কাজ করছি। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকেও সহায়তা করতে হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো যদি আগের সেই ইভিল প্র্যাকটিসে (বাজে চর্চা) ঢুকে যায়, তাহলে শেষ পর্যন্ত যে পরিবর্তনের জন্য এত মানুষ জীবন দিয়েছে, সেটা সম্ভব হবে না। প্রতিটি পক্ষকে সহায়তা করতে হবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি বিষয় পরীক্ষিত হচ্ছে যে, তারা যেকোনো অন্যায় বা দুর্নীতির ক্ষেত্রে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে আরও প্রান্তিক পর্যায়ে তারা যদি এটা বাস্তবায়ন করতে পারে, তাহলে লোকাল পর্যায়ের দুর্নীতিও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’
বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।