ঢাকা: চতুর্থ টিকা হিসেবে জরুরি ব্যবহারে অনুমোদন পাওয়া ফাইজার-বায়োএনটেক কোভিড-১৯ টিকা শিগগিরই প্রয়োগ শুরু হচ্ছে। তবে ঢাকার বাইরে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রার সংরক্ষণাগার না থাকায় আপাতত ঢাকায় বসবাসরত নাগরিকদেরই এই টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
ইতিমধ্যে রাজধানীর চারটি স্থানকে টিকাদানের জন্য নির্ধারণ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সুরক্ষা অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধিত জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হবে এই টিকা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে টিকাদানের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। এর বাইরে আরও দু-একটি কেন্দ্র বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, যে কেন্দ্রগুলোকে প্রস্তাব করা হয়েছে, তার থেকে আরও কয়েকটি কেন্দ্র বাড়তে পারে। দু-এক দিনের মধ্যে টিকা প্রয়োগ শুরু হতে পারে।
ম্যাসেঞ্জার আরএনএ (এমআরএনএ) ভিত্তিক এই টিকা তাপ ও আলোর প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। এ কারণে কোনোভাবেই এটি আলো ও তাপের সংস্পর্শে রাখা যাবে না। ফাইজারের এই টিকা দুই ডোজের। প্রথম ডোজ নেওয়ার তিন থেকে চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যাবে। প্রতি ডোজের পরিমাণ শূন্য দশমিক ৩ এমএল।
গত বৃহস্পতিবার (২৭ মে) ফাইজারের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর তিন দিন পর গত সোমবার রাতে ১ লাখ ৬০২ ডোজ টিকা নিয়ে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি বিমান ঢাকায় পৌঁছায়। পরে টিকাগুলো ইপিআইয়ের তত্ত্বাবধানে মহাখালীর হিমাগারে নেওয়া হয়।
ফাইজারের টিকা সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। সেখানে আলট্রা-লো ফ্রিজারে মাইনাস ৬০ থেকে ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা হয়েছে। তবে কেন্দ্রে নেওয়ার আগে আইএলআর রেফ্রিজারেটরে ৮ ঘণ্টা রেখে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখার উপযোগী করা হবে। এ অবস্থায় টিকা সংরক্ষণ করা যাবে অন্তত পাঁচ দিন। তবে ভাউলুয়েন্ট মিশিয়ে ছয় ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োগ করতে হবে।
দেশে এখন পর্যন্ত ফাইজারসহ অনুমোদন পেয়েছে চারটি ভ্যাকসিন। বাকি তিনটি হলো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড, রাশিয়ার স্পুতনিক-ভি ও চীনের সিনোফার্মার টিকা। এর মধ্যে প্রয়োগ হয়েছে কোভিশিল্ড ও সিনোফার্মার টিকা। তবে ফাইজার প্রয়োগের অপেক্ষায় রয়েছে।
তবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় স্পুতনিক-ভি টিকা আসা নিয়ে শঙ্কা থাকলেও এবার তা কাটতে চলেছে। রাশিয়া থেকে এক কোটি ডোজ টিকা কিনতে সম্মত হয়েছে সরকার। চূড়ান্ত চুক্তি হলে তিন দফায় এই টিকা দেশে আসবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।