নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাবের পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা ছেঁড়ার ঘটনায় কেন প্রতিক্রিয়া হচ্ছে—তা খতিয়ে দেখতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘শরীফার গল্পের উপস্থাপনা বিভ্রান্তি এবং বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস থাকলে তা পরিবর্তন করা যায় কি না এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করব।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একটি গল্পের কারণে যদি প্রতিক্রিয়া হয়, তা কেন হচ্ছে সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। আমাদের দেশে একটি গোষ্ঠী নানান বিষয়ে ধর্মকে ব্যবহার করে। নানান সময়ে অরাজকতা করা বা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার প্রবণতা তাদের আছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘একটি সংগঠন থেকে কিছুদিন আগে আমার কাছে কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল। কওমী মাদ্রাসার কিছু শিক্ষক এসেছিলেন। সেখানে তাঁরা দাবি করেছেন, ট্রান্সজেন্ডার শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে। বিভ্রান্তি সৃষ্টির বিষয়টি তাঁরা আমাদের নজরে এনেছিলেন। আমরা যখন আলোচনা করেছি তখন দেখেছি শব্দটা ট্রান্সজেন্ডার নয়, শব্দটা থার্ড জেন্ডার।’
শরীফার গল্পের উপস্থাপনা পরিবর্তন করা যায় কি না এ বিষয়ে বিশেজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করার কথাও জানান মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিরা সমাজে হিজড়া নামে পরিচিত। তাঁরাও দেশের নাগরিক। তাঁদের নাগরিক অধিকার রয়েছে। তবে গল্প উপস্থাপনার ক্ষেত্রে যদি বিভ্রান্তি এবং বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস থেকে থাকে, তাহলে এ গল্পের উপস্থাপনা পরিবর্তন করা যায় কি না এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করব। তাঁদের প্রতি সম্মান রেখে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে যদি ভিন্ন কোনো কিছু করার সুযোগ থাকে তাহলে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মতামত দেবেন। এটা যেহেতু বিশেষায়িত বিষয়। আমরা পলিসি লেভেলে এটি নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘উপস্থাপনে যদি কোনো বিতর্ক বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনা যেতে পারে যদি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সঙ্গে আলোচনা করব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা একটি ভিডিও দেখেছি।’
১৯ জানুয়ারি রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে আলোচনায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।