হোম > জাতীয়

বঙ্গোপসাগর সংলাপ

‘সংখ্যা বদলে মানুষের চোখে ধুলা দিত তারা’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ফাইল ছবি

পতিত সরকার সংখ্যা বানানোর খেলায়ও মেতে উঠেছিল বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতি-সংক্রান্ত শ্বেতপত্র প্রণয়ন জাতীয় কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, সংখ্যা বদলে ফেলে তারা ভোটের ফল ঠিক করত। মুদ্রাস্ফীতিসহ বিভিন্ন উপাত্তের সংখ্যা বদলে ফেলে তারা দেশের অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে মানুষের চোখে ধুলা দেওয়ার চেষ্টা করত।

রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে বঙ্গোপসাগর সংলাপে (বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন ২০২৪) আজ সোমবার এসব এ কথা বলেন দেবপ্রিয়। এ সংলাপের আয়োজক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ।

কর্তৃত্বপরায়ণ সরকারের পতন হলেই একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই বলে মন্তব্য করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, গভীর মিথ্যাচার, সর্বগ্রাসী ভয় জারি রাখা, বহুত্ববাদী সব মতের বিরুদ্ধে দমনপীড়নের মাধ্যমে পতিত শাসকগোষ্ঠী এমন একটি ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছে, যাতে আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা যায়—গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের কণ্ঠরোধ করা যায়।

বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, সাধারণভাবে ধারণা করা হয়, রাজনীতিকেরা একচেটিয়া ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করেন। কিন্তু বাংলাদেশে বিগত সরকারের সময় কতিপয় একচেটিয়া ব্যবসায়ীই রাজনীতিকদের নিয়ন্ত্রণ করতেন। এর মাধ্যমে ওই ব্যবসায়ী চক্র পুরো সরকারব্যবস্থাসহ সবকিছুর ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। এর পরিণামে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানসহ সব ক্ষেত্রে যারপরনাই ভুগতে হয়েছে। বৈষম্য বেড়েছে। জীবনযাত্রার মান নেমে গেছে।

ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলাচ্ছে
সংলাপের একটি অধিবেশনে সার্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বরিস তাদিচ বলেন, বাংলাদেশ ছোট রাষ্ট্র বলে একটি কথা বলা হয়। একটি রাষ্ট্র ছোট বা বড়, তা তার আয়তনের ওপর নির্ভর করে না, এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিপুলসংখ্যায় তরুণসহ ১৮ কোটি মানুষ কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশে থাকলে তা ছোট হয় কী করে!

বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে বরিস তাদিচ বলেন, ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিভিন্ন পরাশক্তি, মাঝারি মানের শক্তি জাপান ও আঞ্চলিক শক্তি ভারত নজর রাখছে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারসাম্যমূলক কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব দিতে হবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য বাড়ানোর তাগিদ
পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ মারুফ অন্য একটি অধিবেশনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আসিয়ানের উদাহরণ টেনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, জোরালো অর্থনৈতিক কূটনীতি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিরাজমান বাধাগুলো সরিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে একাধিক বিদেশি আলোচক বলেন, আন্তর্জাতিক অংশীদারত্বের সম্পর্কে বন্ধু বলে আসলে কিছু নেই। এ ক্ষেত্রে সব সম্পর্ক স্বার্থের। এ বিষয়ে ঢাকায় সুইজারল্যান্ডের উপরাষ্ট্রদূত করিন হেনচেজ পিজনানি বলেন, অংশীদারত্বের বিষয়ে সব আলোচনা করতে হবে প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে।

মানবাধিকারের জন্য আন্দোলনের তাগিদ
চাকমা সার্কেল প্রধানের উপদেষ্টা রানি ইয়ান ইয়ান বলেন, অনেক ক্ষেত্রে গণমাধ্যমে মানবাধিকারকর্মীদের সন্ত্রাসী ও অসভ্য বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে দেখানো হয়। এভাবে প্রচার করতে থাকলে মানবাধিকারকর্মীদের বিপদে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ থাকে না। তবুও নিজেদের অধিকারের জন্য আওয়াজ তুলতে হবে।

ভারতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান মান্ত্রার প্রেসিডেন্ট সাঁথি ম্যারিয়েট ডি’সুজা বলেন, গণতন্ত্র থাকা মানেই তা নিখুঁত নয়। বিশেষ করে এশিয়ায়। মানবাধিকারের জন্য রাজনৈতিক আন্দোলন প্রয়োজন।

ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান বলেন, জেলে বন্দী হওয়া, গুম হওয়া, অপরাধী বানানো, অনলাইনে হয়রানির শিকার হওয়ার মতো বিভিন্ন আতঙ্কের মধ্য দিয়ে মানবাধিকারকর্মীদের যেতে হয়। বাংলাদেশে বিগত বছরগুলোতে এর প্রতিটিই ঘটেছে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় সুশীল সমাজের ভূমিকা আছে
একটি অধিবেশনে আলোচকেরা বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে শুধু সরকার নয়, সুশীল সমাজেরও ভূমিকা রয়েছে। সুশীল সমাজ যেখানে দৃঢ়, সেখানে চাইলেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা সম্ভব হয় না।

পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইসলামাবাদের পরিচালক সোহাইল মাহমুদ বলেন, পাকিস্তানে গণমাধ্যম সেখানকার সমাজের স্পন্দন তুলে ধরে। সেখানেও সন্ধ্যায় টক শো হয়। রাজনৈতিক মতামত, নীতিনির্ধারণীসহ নানা বিষয়ে বিতর্ক চলে। মানুষ এগুলোতে সম্পৃক্ত হতে পারে।

ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দেবজ্যোতি চন্দ বলেন, তাঁর দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমেই উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সুতরাং এখানে অন্য কিছু ভাববার কারণ নেই।

১৬ নভেম্বর শুরু হওয়া তিন দিনের এ সংলাপ গতকাল শেষ হয়েছে। বিশ্বের ৮০টি দেশের লেখক, গবেষক, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, আমলা, শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

নবীন উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা শুনলেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের পাকিস্তান সফর, প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গে বৈঠক

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সরানো হলো পরিচালক মনিরুজ্জামানকে

গত বছর ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, ৬১ শতাংশই নারী: জরিপ

পাঁচ মাসে মাজার-দরগায় ৪৪ হামলা: প্রেস উইং

বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাস গ্রেপ্তার

লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৪৭ বাংলাদেশি

বিয়ের পিঁড়িতে বসা হলো না হুমায়ুনের

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে মতামত দিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে ৬ দিন সময়

সস্তায় বিক্রি হচ্ছে শৈশব

সেকশন