সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন বাঁচানোর জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। পাশাপাশি তিনি দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘বিশৃঙ্খল জনতার শাসন’ চলতে দেওয়ার জন্য দোষারোপ করেছেন এবং একটি নির্বাচনের দাবি করেছেন তিনি। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন জয়।
সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘সম্পূর্ণ ক্ষমতাহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা জয়। ওয়াশিংটন থেকে এএফপিকে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খল জনতার (মব) শাসন চলছে।’
আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে প্রধান বিচারপতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এবং পুলিশ প্রধানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল যদি জনতা বলে—না, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারে এই ব্যক্তিকে চাই না, তবে তাঁকেও পরিবর্তন করতে হবে।’
জয় মত দিয়েছেন, জনগণের বৈধতা নিয়ে একটি বৈধ সরকারই হতে পারে সত্যিকারের কর্তৃত্বের অধিকারী। তা না হলে বিশৃঙ্খলা চলতেই থাকবে।
১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য আওয়ামী লীগ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। জয় বলেন, ‘আমাদের লাখ লাখ অনুসারী আছে। তারা দেশ ছেড়ে কোথাও যাচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না। এটা দেশের অর্ধেক মানুষ কখনোই মেনে নেবে না।’
এ সময় দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির সঙ্গে কাজ করার বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। আর মায়ের ক্ষমতাচ্যুতির জন্য সরকারের অন্যদের দোষারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘এগুলো নিম্ন পর্যায়ের লোকেরা বা চেইন অব কমান্ডের দ্বারা তৈরি হয়েছিল। এর জন্য আমার মাকে দোষ দেওয়া দুর্ভাগ্যজনক।’
বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলি চালানো বাড়াবাড়ি ছিল স্বীকার করে তিনি যুক্তি দেন, সহিংসতা দুই পক্ষ থেকেই হয়েছে। জয় বলেন, ‘কিছু পুলিশ অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছিল। কিন্তু পুলিশের ওপরও হামলা হয়েছিল। পুলিশ সদস্যরাও নিহত হয়েছে। সহিংসতা একতরফা ছিল না।’
আন্দোলনকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র সহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়েও পুলিশের ওপর হামলা করেছিল বলে দাবি করেন জয়। এসব অস্ত্র সরবরাহ ও সহিংসতার পেছনে বিদেশি শক্তি কাজ করেছিল বলে জানান তিনি। তবে এই দাবির পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি।
মায়ের জীবন বাঁচানোর বিষয়ে বলতে গিয়ে জয় বলেন, ‘তাঁর জীবন বাঁচানোর জন্য এবং তাঁকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র) মোদির সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
শেখ হাসিনা বাংলাদেশেই জীবনের শেষ সময় কাটাতে চেয়েছিলেন বলে জানান তাঁর ছেলে। তিনি বলেন, ‘এটি তাঁর (শেখ হাসিনা) শেষ মেয়াদ হতে যাচ্ছে। তাঁর বয়স ৭৬ বছর। তাই তিনি শুধু বাড়িতে ফিরে যেতে চান। পারবেন কি-না, আমরা দেখার অপেক্ষায় আছি।’