দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। প্রতিদিনই একের পর এক রেকর্ড গড়ছে ডেঙ্গু। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি মাসে হাসপাতালে দিনে গড়ে দুই শতাধিক রোগী শনাক্ত ও ভর্তি হচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। যা এ বছরের মৃত্যুতে সর্বোচ্চ রেকর্ড। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তেও নতুন রেকর্ড গড়েছে। এ সময় ২৮৪ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। চলতি মাসের ছয় দিনে এক হাজার ২১৬ জন রোগী শনাক্ত ও ভর্তি হয়েছেন। অর্থাৎ গড়ে দুই শতাধিক রোগী দিনে শনাক্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। আর নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ২৮৪ জন। এদের মধ্যে ঢাকায় ২২৪ জন এবং বাইরে ৬০ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৮৫০ জন। এদের মধ্যে রাজধানীর ৪৭টি সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৭১১ জন এবং বাইরে ১৩৯ জন।
জুলাই মাসের ৩১ দিনে মোট রোগী শনাক্ত হয়েছিল এক হাজার ৫৭১ জন। আর আগস্টের ৩১ দিনে মোট রোগী তিন হাজার ৫৩১ জন শনাক্ত হয়। আর চলতি মাসের ছয় দিনে এক হাজার ২১৬ জন শনাক্ত হয়। জুনে মৃত্যু হয়েছিল একজনের, জুলাইতে নয়জন ও আগস্টে ১১ জন এবং সেপ্টেম্বরে ১০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৩৯৭ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৬ হাজার ৫১৬ জন। ঢাকায় ভর্তি হয়েছেন ৬ হাজার ৪৮ জন এবং ছাড়পত্র নিয়েছেন ৫ হাজার ৩২৪ জন। ঢাকার বাইরে মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৩৪৯ জন। এদের মধ্যে ছাড়পত্র নিয়েছেন এক হাজার ১৯২ জন। এ সময় মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের।
কীটতত্ত্ববিদদের জানান, তাদের আগেই ধারণা ছিল আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠবে। এ জন্য সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। যেসব এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি সেখানে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে দ্রুত মশা মারতে হবে।