ভারতের চেরা পুঞ্জিতে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে হাওরের পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক আজ সোমবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১ থেকে ৬ এপ্রিল ১ হাজার ২০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। অথচ সারা বছর বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫ হাজার মিলিমিটার। হঠাৎ বৃষ্টিপাত ও নদীতে বেশি মাত্রায় পলি জমায় বাঁধের ওপর প্রভাব পড়ে। হাওরে কি পরিমাণ ফসল ক্ষতি হয়েছে সেটি জানার জন্য কৃষিমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করবেন। সেখান থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের পরিমাণ জানা সম্ভব হবে।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সুনামগঞ্জে দুই লাখ ২২ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাওরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষি ঋণ মওকুফ করা হবে এবং তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৪৮টি মন্ত্রণালয়ের অধীনে হাওরে ১১০টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এদিকে হাওর অঞ্চলে বাঁধে ভাঙন দেখা দেওয়ার ঘটনায় ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করছি। এর মধ্যে কোনো গাফিলতি থাকলে, সেটা খুঁজে বের করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বর্তমানে সুনামগঞ্জ জেলার হাওরসমূহের বোরো ফসল আগাম বন্যা হতে রক্ষার্থে তদারকি ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধসমূহের মেরামত কাজ বাস্তবায়নসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলাভিত্তিক মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। তা ছাড়া সুনামগঞ্জ জেলায় বাপাউবোর সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের সকল প্রকার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
তবে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে পাওয়া বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চলতি সপ্তাহে স্বাভাবিক থেকে বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী ১০ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম (বরাক অববাহিকা) এবং মেঘালয় প্রদেশের স্থানসমূহে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, জাদুকাটা, লুভাছড়া, সারিগোয়াইন, ধলাগাং, পিয়াইন, ঝালুখালী, সোমেশ্বরী, ভুঘাই-কংস, ধনু-বাউলাই নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পেয়ে কতিপয় পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।