বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) এর সদস্য আহসান হাবীব। অভিযোগ সমূহের মধ্যে রয়েছে পিএইচডি জালিয়াতি, অর্থ লোপাট, অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট ভঙ্গ, ঘুষ প্রদান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি’তে অনলাইনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন আহসান হাবীব।
আহসান হাবীব লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের খুশি রাখতে বিএলআরআই মহাপরিচালক আবদুল জলিলের নির্দেশে নিয়মিতভাবে গবেষণা প্রাণীর উৎপাদিত ডিম, দুধ, মুরগি মন্ত্রণালয়ে প্রচুর পরিমাণে পাঠানো হয়। এমনকি ছুটির দিনে তাঁরা বিএলআরআইতে ভ্রমণে আসলে বিরাট ভূরিভোজের আয়োজন করা হয় এবং এ সকল অর্থের জোগান দেওয়া হয় প্রাণীর খাদ্য বাজেট থেকে। ছুটির দিনে কর্মকর্তাদের মাছ ধরার শখও মেটানো হয় প্রাণীর খাদ্য বাজেট থেকে।’
এর আগে গত ২২ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার বরাবর বিএলআরআই এর মহাপরিচালক আবদুল জলিলের নামে পিএইচডি জালিয়াতির অভিযোগ করেন আহসান হাবীব।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘জাবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মফিজুল কবিরের তত্ত্বাবধানে ২০১৫ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন আবদুল জলিল। তাঁকে ‘Characterization of Black Bengal Goat’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভের (থিসিস) জন্য এ ডিগ্রি দেওয়া হয়। কিন্তু উক্ত অভিসন্দর্ভটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিএসসি শিক্ষার্থীর থিসিস থেকে হুবহু নকল করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম আজিজুর রহমান। তিনি ‘Molecular Characterization of Black Bengal Goat and Jamunapari Goat Breeds by RAPD Markers’ শীর্ষক থিসিস সম্পন্ন করেন। পরে সেটি ‘American Journal of Animal and Veterinary science’ এ ২০০৬ সালের ভলিউম-১ এ প্রকাশিত হয়। আবদুল জলিল এ চুরির মাধ্যমে স্বনামধন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা এবং গবেষণার মান ক্ষুণ্ন করারও চেষ্টা করেছেন।’
এ দিকে ‘American Journal of Animal and Veterinary science’ এর ওয়েবসাইটে ‘Molecular Characterization of Black Bengal Goat and Jamunapari Goat Breeds by RAPD Markers’ শীর্ষক গবেষণাপত্রের লেখক হিসেবে আবদুল জলিলসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ রয়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) এর মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল জলিল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আহসান হাবীব আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ করেছে তার সবগুলোই অসত্য। সে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে কারণ আমি তাঁর অবৈধ আবদার রাখতে পারিনি। সে বিএলআরআই-এ ডেইরি উন্নয়ন গবেষণা প্রকল্পের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু সে তাঁর কার্যকাল বৃদ্ধি করতে চায়। যেটা অবৈধ। ফলে আমি তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি করিনি। তাই ক্ষোভের বশীভূত হয়ে সে এসব অভিযোগ এনেছে আমার বিরুদ্ধে।’
তিনি বলেন, ‘আমি কোন পিএইচডি জালিয়াতি করিনি। একটি বিশ্ববিদ্যালয় বুঝেশুনেই আমাকে ডিগ্রি দিয়েছে। আর উচ্চপদস্থ কোন কর্মকর্তার বন্ধু হলে যে আমি এই পদের যোগ্যতা হারিয়েছি এমন কোন বিধি নেই। আমি শুদ্ধাচার পুরস্কারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।’