বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নাগরিকদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৮০ হাজার জনকে মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে দেশটির সরকার। অবশ্য ফেরত যাওয়ার যোগ্য এই মানুষেরা আগামী বছরের মধ্যে নিজেদের দেশে যেতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার নিশ্চিত নয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ সংশয়ের কথা প্রকাশ করেন।
আজ শনিবার (৫ এপ্রিল) ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না যে আগামী বছরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠাতে পারব কি না।’ মিয়ানমারের রাখাইন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘আরাকান আর্মি’ দখলে নেওয়ায় জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, প্রেস সচিব এমনটা মনে করেন।
মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ে গতকাল শুক্রবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গে আলাপের সময় ১ লাখ ৮০ হাজার জনকে মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার যোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করার কথা জানান।
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারের সেনা সরকারের নিবর্তনমূলক তৎপরতার মুখে বিভিন্ন ক্যাম্পে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। এর মধ্যে দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় ফেরত পাঠানোর জন্য পরিচয় যাচাই করতে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গার নাম মিয়ানমার সরকারকে দেওয়া হয়।
শফিকুল আলম ফেসবুকে বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশকে মিয়ানমারের ওপর ‘চাপ সৃষ্টি করে’ যেতে হবে, যাতে তারা স্বেচ্ছায়, পূর্ণ মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে ফিরিয়ে নেয়।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টা গতকাল ব্যাংককে থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ও বাংলাদেশের আসিয়ান সদস্যপদ লাভের ক্ষেত্রে থাকসিনের সহায়তা কামনা করেন।
মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী ও স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মিন অং হ্লাইং গতকাল ব্যাংককে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধান উপদেষ্টা ২৮ মার্চ ভূমিকম্পে মিয়ানমারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য আরও মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি থাকার কথা জানান।