কলকাতা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন ২২০ জন বাংলাদেশি যাত্রী। গতকাল রোববার গভীর রাত থেকে সেখানে তাঁরা চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। যাত্রীদের অভিযোগ, আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত তাঁদের পানি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এমনকি কখন তাদের ঢাকায় ফেরানো হবে—সে বিষয়ে নেই কোনো সঠিক উত্তর। এতে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
গতকাল রোববার রাতে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা মালিন্দ এয়ারের (ফ্লাইট নম্বর ওডি-১৬২) একটি বিমান ঘন কুয়াশার কারণে কলকাতা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে।
তবে প্রায় ১৫ ঘণ্টা অতিক্রম হলেও আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিমান পরিবহন সংস্থার পক্ষ থেকে আটকে পড়া বাংলাদেশি যাত্রীদের ঢাকা পৌঁছানোর কোনো ব্যবস্থা করেনি। ফলে সেখানে নারী-শিশু ও বেশ কয়েকজন মুমূর্ষু রোগীসহ প্রায় ২২০ জন যাত্রী উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে কোনো কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। কর্তৃপক্ষের দাবি, এটি সংশ্লিষ্ট বিমান পরিবহন সংস্থার নিজস্ব বিষয়।
মালিন্দ এয়ারের ভারতের আবাসিক অফিস এবং কুয়ালালামপুর অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁদের পাওয়া যায়নি। এদিকে মালিন্দ এয়ারের ঢাকার স্টেশন ম্যানেজার প্রদীপ কুমার দে আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল ফ্লাইটটি ঢাকায় নামতে পারেনি। আজ ৬ জানুয়ারি দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করবে।
কলকাতায় আটক পড়া মালিন্দ এয়ারের একজন যাত্রী রিয়াজ ফাহাদী সময় টেলিভিশনকে জানান, কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর থেকেই রাত ১০টায় বিমানটি ছাড়ার কথা থাকলেও সেখানে ১ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। বিমানটি সঠিকভাবে চললে ভোর ৩টায় ঢাকা পৌঁছানোর কথা। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে বিমানটি ২২০ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতায় অবতরণ করে। ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত যাত্রীদের বিমানে অপেক্ষা করতে হয়। পরে তাদের কলকাতা বিমানবন্দরে ‘অপেক্ষালয়’-এ নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল থেকে কোনো যাত্রীকে এক বোতল পানি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। যদিও দুপুরে খাবার দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কখন ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে— সে বিষয়ে মালিন্দ এয়ারের কেউ কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।
ওই বিমানে গুরুতর অসুস্থ যাত্রী রয়েছেন প্রায় ৫ জন। যাদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন, সেটার ব্যবস্থা করা হয়নি। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আটকে থাকায় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
অন্য একজন যাত্রী বলছেন, আগামীকাল সকালে তাঁর পরিবারের সঙ্গে বিদেশ বেড়াতে যাওয়ার কথা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কলকাতা থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না।
২২০ জন বাংলাদেশি যাত্রী কলকাতা বিমান বন্দর থেকে কখন নিজের দেশে ফিরতে পারবেন—সে বিষয়ে জানা নেই কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের।