ঢাবি প্রতিনিধি
মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্বের প্রতিটি জনগোষ্ঠীর অসাধারণ সম্পদ বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এখন এটি ওয়ার্ল্ড মেমোরি অব হেরিটেজের অন্তর্ভুক্ত। ফলে এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। বিশ্বের প্রতিটি জনগোষ্ঠীর একটি অসাধারণ সম্পদ।’
আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় বাংলা নতুন বর্ষকে স্বাগত জানাতে আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা অনুষদ থেকে শাহবাগ হয়ে আবার চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হয়।
আখতারুজ্জামান বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার রক্ষণাবেক্ষণ, সংরক্ষণ এবং সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া সবার সম্মিলিত দায়িত্ব এবং এটি অন্তর্ভুক্তমূলক দৃষ্টি ও দর্শনের প্রতিফলন। এর মধ্য দিয়ে এটি অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার বার্তা সব সময়ই দিয়ে থাকে।’
আখতারুজ্জামান আরও বলেন, ‘সব ধরনের উগ্রবাদিতা, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এটি একটি মানবিক, অসাম্প্রদায়িক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণের আহ্বান, যেটিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‘স্মার্ট বাংলাদেশ’’। এই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।’ মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া সবার প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি।
‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ছিল পুলিশের সোয়াত টিম, এরপর মোটরসাইকেলে র্যাবের একটি দল। তাঁদের পেছনে ছিল ডিএমপি পুলিশের একটি দল। এরপর ছিলেন সাদা পোশাকে পুলিশ ও ডিবির সদস্যরা। এ ছাড়া ড্রোন উড়িয়ে পুলিশ ও ডিবির সদস্যরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখছেন। তাঁদের পেছনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেনের নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় অংশ নেয় সর্বস্তরের মানুষ।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা থেকেই পুরো ক্যাম্পাস এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। ক্যাম্পাস এলাকায় মোটরসাইকেল থেকে শুরু করে সব ধরনের যানবাহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয় ক্যাম্পাসে। এদিকে নববর্ষের এই দিনে ক্যাম্পাস এলাকায় ভুভুজেলা বাজানো ও বিক্রি করা সম্পূর্ণ নিষেধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।