প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে জাতি দায়মুক্ত হয়েছে। অপরাধীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে, আইনি সমস্ত নিয়মনীতি মেনে, নির্মোহভাবে এই বিচার করেছি। সেই বিচারে তাদের সাজা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সেই সাজাগুলো কার্যকর হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো পেয়েছে বিচার।’
বুধবার রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মিলনায়তনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতি ঢাকা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘১৯৭১ সালে কিশোর বয়সে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যে গণহত্যা, গণধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের নির্মমতা আমি প্রত্যক্ষ করেছি। তা আবার উপলব্ধি করেছি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে, চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়।’
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন-সার্বভৌম অসাম্প্রদায়িক অর্থনৈতিক শোষণমুক্ত গণতান্ত্রিক ও ন্যায়বিচারভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল স্তম্ভ। এই চেতনা সামনে রেখেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি স্বাধীন স্বতন্ত্র ও সার্বভৌম রাষ্ট্রকাঠামো, বাঙালি জাতির একমাত্র রাষ্ট্র বাংলাদেশ।’
বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘তিনি সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেখেছিলেন দুর্নীতিমুক্ত, শোষণ, বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন। যেখানে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে। তাঁর আকাঙ্খা, তাঁর স্বপ্নকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব আমাদেরই। মহান মুক্তিযুদ্ধ, পবিত্র সংবিধান আমাদের সেই ম্যান্ডেট দিয়েছে।
বিচার বিভাগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘সমগ্র বিচার বিভাগকে সচল ও আরও গতিশীল করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে জাতির কাছে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমার সঙ্গে যে বিচারকেরা আছেন সুপ্রিম কোর্টে, সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমাদের এটা করতেই হবে।’