ঢাকা: কোভিড-১৯ মহামারিতে গত বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর সময়কালে অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতায় স্বল্প আয় ও অনানুষ্ঠানিক খাতে সম্পৃক্তরা চাকরি ও উপার্জনের সুযোগ হারিয়েছেন। এতে ৭৭ শতাংশ পরিবারের গড় মাসিক আয় কমেছে। পাশাপাশি ৩৪ শতাংশ পরিবারের কেউ না কেউ চাকরি বা আয়ের সক্ষমতা হারিয়েছেন। জাতিসংঘের ইউএন ওমেন, ব্র্যাক ও নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অন ইন্টারন্যাশনাল কো–অপারেশন যৌথভাবে এ জরিপ চালিয়েছে।
ভার্চ্যুয়াল প্রকাশিত জরিপে জানানো হয়, গত বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর সময়কালে দৈনন্দিন খরচ মেটাতে পরিবারগুলো সঞ্চয় ও ধারদেনার ওপর নির্ভরশীল ছিল। পরিবারগুলোর মাসিক আয় ৬২ শতাংশ কমেছে। আর ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩১ শতাংশ। এ ছাড়া গবেষণায় বিপরীতমুখী অভিবাসনের প্রভাবে বাংলাদেশের মধ্যম মানের শহর, উপজেলা ও গ্রামীণ অঞ্চলে জনমিতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশের ওপর পরিবর্তনগুলো তুলে ধরা হয়।
জরিপে আরও বলা হয়, বিদেশ থেকে ফেরত আসা ২৫ শতাংশ প্রবাসী শ্রমিক অভিবাসন ঋণ পরিশোধ নিয়ে উদ্বিগ্ন। ৪৪ শতাংশ জানিয়েছেন যে তাঁরা কোনো উপার্জনমূলক কাজ পাননি। পরিবারের জমাকৃত অর্থ, বিভিন্ন সম্পদের ভাড়া এবং সম্পদ বন্ধক দিয়ে খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিবারগুলোতে মহামারির সময়ে গড়ে মাসিক রেমিট্যান্স ৫৮ শতাংশ কমেছে।
এই সময়ে বাল্যবিবাহ বাংলাদেশে বেড়ে গেছে বলে জরিপে জানানো হয়। জরিপের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে বিয়ে হওয়া ৭৭ শতাংশ কনের বয়স ১৮ বছরের নিচে। আর ৬১ শতাংশ কনের বয়স ১৬ বছরের নিচে।
চাকরি ও উপার্জন হারিয়ে গ্রাম ও মফস্বল শহরগুলোতে ফিরে আসা পরিবারগুলো বিদ্যমান স্থানীয় অপ্রতুল সম্পদ বিশেষত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে বলে জরিপে জানানো হয়। অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের মধ্যে ৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ স্কুলের শিক্ষার্থী রয়েছে, যাদের বয়স ৫ থেকে ১৬ বছর। আবারও স্কুল খোলার পর যদি তারা পূর্ববর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরত না যেতে পারে, তবে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। আর অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের মধ্যে ১৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ ৪০–এর ওপর আর ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশের বয়স ৫০–এর ওপরে। এটি স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবার ওপর বিশেষ করে অসংক্রামক রোগের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।