Ajker Patrika
হোম > জাতীয়

বাল্যবিবাহ অবসানের লড়াই চ্যালেঞ্জের মুখে

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

বাল্যবিবাহ অবসানের লড়াই চ্যালেঞ্জের মুখে

বিশ্বের প্রায় অর্ধেক (৪৫ শতাংশ) শিশুবধূর বাস দক্ষিণ এশিয়ায়। এই অঞ্চলে আবার বাল্যবিবাহ সবচেয়ে বেশি হয় বাংলাদেশে। ২০১৯ সালের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে ৫১ শতাংশ নারীর বিয়ে হয়েছিল তাঁদের শৈশবে।

জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল (ইউনিসেফ) গতকাল বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এক দশকে বাল্য বিবাহ ধারাবাহিকভাবে কমা সত্ত্বেও সংঘাত, জলবায়ুজনিত অভিঘাত, কোভিড-১৯-এর বিরূপ প্রভাবসহ একাধিক বৈশ্বিক সংকট বাল্যবিবাহের অবসানকে কঠিন লড়াইয়ের মুখে ফেলছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের প্রচলন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং বিশ্বের মধ্যে অষ্টম সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৪৫ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগে। ১ কোটি ৩ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, শিশুদের বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশে শিশুবধূর সংখ্যা বিস্ময়কর। লাখ লাখ মেয়ের শৈশব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং তারা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। মেয়েরা যাতে স্কুলে যেতে পারে তা নিশ্চিত করতে এবং পরিপূর্ণভাবে সম্ভাবনা অনুযায়ী বেড়ে উঠতে সুযোগ দিতে সমন্বিত পদক্ষেপ দরকার।

বিশ্বব্যাপী জীবিত প্রায় ৬৪ কোটি মেয়ে ও নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের কৈশোরে। অর্থাৎ প্রতিবছর ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ের বিয়ে হয় তাদের কৈশোরে। পাঁচ বছর আগে প্রকাশিত সর্বশেষ হিসাবে এ পর্যন্ত কৈশোরে বিয়ে হওয়া তরুণীর সংখ্যা ২১ থেকে ১৯ শতাংশে নেমেছে। তবে এই অগ্রগতি সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে শিশুবিয়ের অবসানে যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণে বিশ্বব্যাপী ওই কমার গতি ২০ গুণ বাড়াতে হবে। 

শিশুবধূর সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে সাবসাহারান আফ্রিকার অবস্থান দ্বিতীয় (২০ শতাংশ)। এই অঞ্চলে বর্তমানে যে গতিতে শিশুবিয়ের হার কমছে, সেই গতিতে চলতে থাকলে শিশুবিয়ে বন্ধ হতে ২০০ বছরের বেশি লাগবে। লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলও বর্তমানের ধারা অব্যাহত থাকলে অঞ্চলভেদে শিশুবিয়ের দিক থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম অঞ্চলে পরিণত হবে। ক্রমাগত অগ্রগতির পর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ায়ও অগ্রগতি স্থবির হয়ে পড়েছে।

এ প্রসঙ্গে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, বিশ্ব একের পর এক সংকটে জর্জরিত, যা ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের আশা ও স্বপ্নকে চুরমার করে দিচ্ছে। বিশেষ করে মেয়েদের, যাদের বিয়ের কনে হিসেবে নয় বরং শিক্ষার্থী হিসেবে থাকা উচিত। স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান সশস্ত্র সংঘাত এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব পরিবারগুলোকে শিশুবিয়ের মতো মিথ্যা ধারণার আশ্রয় নিতে বাধ্য করছে।

শিশুবিয়ের বৈশ্বিক হার কমে আসায় বড় ভূমিকা রাখছে দক্ষিণ এশিয়া। এই অঞ্চলে বর্তমানে যে গতিতে শিশুবিয়ে কমছে, তাতে সেখানে শিশুবিয়ের পুরোপুরি অবসানে প্রায় ৫৫ বছর লাগতে পারে। তবে এই অঞ্চলে এখনো বিশ্বে মোট শিশুবধূর প্রায় অর্ধেকের (৪৫ শতাংশ) বসবাস। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ভারত এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তা সত্ত্বেও দেশটি এখনো বিশ্বের মোট শিশুবধূর এক-তৃতীয়াংশের আবাসস্থল।

ইউনিসেফ বলছে, বিশ্বজুড়ে সংঘাত, জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপর্যয় এবং কোভিড-১৯-এর চলমান প্রভাবসমূহ, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য, আয়রোজগারে ধাক্কা এবং স্কুল থেকে ঝরে পড়ার ঘটনা শিশুবিয়ের চালিকা শক্তিগুলোকে বৃদ্ধি করছে। একই সঙ্গে মেয়েদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, সামাজিক সেবা ও কমিউনিটির সমর্থন পাওয়া কঠিন করে তুলছে। ফলস্বরূপ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করা মেয়েদের শিশুবিয়ে হওয়ার ঝুঁকি বৈশ্বিক গড়ের প্রায় দ্বিগুণ। সংঘাতজনিত মৃত্যুর প্রতি ১০ গুণ বৃদ্ধির জন্য শিশুবিয়ের হার ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। একই সময়ে, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনাগুলো মেয়েদের ঝুঁকি বাড়ায় এবং বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে প্রতি ১০ শতাংশ বিচ্যুতি শিশুবিয়ের প্রকোপ প্রায় ১ শতাংশ বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত।

ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘আমরা প্রমাণ করেছি যে শিশুবিয়ের অবসানে অগ্রগতি সম্ভব। তবে এর জন্য শিশুবিয়ের ঝুঁকিতে থাকা মেয়ে ও পরিবারগুলোর জোরালো সমর্থন প্রয়োজন। মেয়েদের স্কুলে টিকিয়ে রাখার বিষয়ে এবং তাদের অর্থনৈতিক সুযোগ নিশ্চিত করার দিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে।’

পিএসসির মাধ্যমে আরও ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেবে সরকার

নভোথিয়েটার থেকে বাদ দেওয়া হলো বঙ্গবন্ধুর নাম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক শান্তি পদক বাতিল

খাবার ও পানীয়র মোড়কে উল্লেখ করতে হবে চিনি, লবণ ও ফ্যাটের মাত্রা

গুমের শিকার ৩৩০ জনের ফেরার আশা ক্ষীণ: কমিশন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

স্কুলে ভর্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের কোটার আদেশ বাতিল

গুমের দায় ব্যক্তির, বাহিনীর নয়: কমিশন

কর্মিসভায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম