নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ছাড়পত্র পেয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের কোভিড টিকা বঙ্গভ্যাক্স। তবে কাঁচামাল না থাকায় ট্রায়ালে যেতে অন্তত দুই থেকে তিন মাস লেগে যেতে পারে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালানো হবে।
আজ রোববার সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন গ্লোব বায়োটেকের কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
এর আগে প্রাণী দেহে সফলভাবে ট্রায়াল চালানোর পর গত বছরের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি) মানবদেহে ট্রায়ালের অনুমোদন দিলেও ঝুলিয়ে রাখে সরকারের আরেক সংস্থা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ)। দীর্ঘ আট মাস পর এবার ডিজিডিএরও অনুমোদন পেল গ্লোব বায়োটেক।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বানরের দেহে চালানো বঙ্গভ্যাক্স পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কিত প্রতিবেদন গত বছরের ১ নভেম্বর বিএমআরসিতে জমা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বিএমআরসির তৃতীয় ও সর্বশেষ চিঠির সব প্রশ্নের জবাবও দেওয়া হয়। পরে গত ২৩ নভেম্বর বিএমআরসির ন্যাশনাল রিসার্চ এথিক্স কমিটির সভায় মানবদেহে ট্রায়ালের অনুমোদন দেয়। এবার ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদনের জন্য এক দিন পর ২৫ নভেম্বর আবেদন করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় আট মাস অজানা কারণে সেখানে ঝুলে রাখা হয়। অবশেষে রোববার সেই ছাড়পত্র দিল সরকারি সংস্থাটি।
ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘অনেক আগেই বিএমআরসি থেকে মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নৈতিক ছাড়পত্র পেলেও অজানা কারণে ওষুধ প্রশাসন সেটি ঝুলে রাখে। এতে করে আমাদের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যায়। এখন নতুন করে সেগুলো আনতে হবে। এরপর আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি শেষ করে ট্রায়ালে যাব আমরা। এতে অন্তত দুই-তিন মাস লেগে যেতে পারে। বিএসএমএমইউ হাসপাতালের ৬০ জনের দেহে এটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘বানর আর মানুষের মধ্যে জিনগত বেশ মিল থাকায় এবং বানরের পরীক্ষায় বঙ্গভ্যাক্স সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং শতভাগ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। ফলে আমরা খুবই আশাবাদী যে, বঙ্গভ্যাক্স মানবদেহেও অনুরূপভাবে কাজ করবে।’
গ্লোব বায়োটেকের দাবি, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বঙ্গভ্যাক্স অতি সংক্রমণশীল ডেল্টাসহ সব ধরন মোকাবিলায় কার্যকর। বানরের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে এই কার্যকারিতার প্রমাণ পেয়েছে তারা।