নড়াইলের লোহাগড়ায় হিন্দুদের দোকানপাট ভাঙচুর, মন্দিরে অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মতো একটি অসাম্প্রদায়িক দেশে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত মহানবী (সা.)-কে কটূক্তির অভিযোগে লোহাগড়ায় হিন্দুদের দোকানপাট ভাঙচুর, মন্দিরে অগ্নিসংযোগসংক্রান্ত সংবাদের প্রতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। নড়াইলের লোহাগড়ায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে উত্তেজিত জনতা স্থানীয় একটি বাজারের ৬টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট এবং একটি মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে মর্মে প্রকাশিত সংবাদ মারফত জানা গেছে। এ ছাড়া ৪টি বাড়িঘর ও এর আসবাব ভাঙচুর করে নগদ টাকাসহ স্বর্ণের গয়না লুট করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন মনে করে, বাংলাদেশের মতো একটি অসাম্প্রদায়িক দেশে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে কোনো ধর্মকে অবমাননা করার অধিকার যেমন কারও নেই, তেমনি আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করার অধিকারও কাউকে দেওয়া হয়নি।
কমিশন মনে করে, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার লক্ষ্যে এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ বারবার সংঘটিত হচ্ছে। কেউ ধর্মকে অবমাননা করলে তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা সমীচীন।
ওই ঘটনায় মহানবী (সা.)-কে কটূক্তির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দ্রুততার সঙ্গে গ্রেপ্তার করে অনাকাঙ্ক্ষিত হামলা ও লুটপাটের পরিস্থিতি এড়ানোর ক্ষেত্রে কারও গাফিলতি আছে কি না, এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট নিবৃত্ত করার বিষয়ে পুলিশের যথাযথ ভূমিকা ছিল কি না, তা জানতে চেয়েছে মানবাধিকার কমিশন। একই সঙ্গে উল্লেখিত বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিনিয়র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মানবাধিকার কমিশন পত্র প্রেরণ করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।