কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
কক্সবাজারে ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের ওপর বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বাধা বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। এ নতুন বাধা রোহিঙ্গাদের জীবিকা অর্জন, শিক্ষা এবং ক্যাম্পের ভেতরে স্বাধীনভাবে চলাচলে আরোপ করা হয়েছে। আজ সোমবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিতে এসব বিষয়ে বলা হয়।
এতে জানানো হয়, নতুন করে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ক্যাম্প এলাকার ভেতর এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার ওপর বাধা সৃষ্টি করছে। সেখানে দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ক্যাম্প থেকে ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য অনুমতিপত্র চাইছে। অনেক ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের মারধরের ঘটনাও ঘটেছে।
এ ছাড়া ক্যাম্প এলাকাতে রোহিঙ্গাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য থাকা হাজারের মতো দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আর ক্যাম্প এলাকাতে রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকার বিষয়টি গভীর উদ্বেগের বলে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে রোহিঙ্গাদের কাজ করার অনুমতি নেই। তারপরও অর্ধেকের মত রোহিঙ্গা ঝুঁকি নিয়ে অনানুষ্ঠানিক কাজে জড়িত, যা রোহিঙ্গাদের গ্রেপ্তার এবং শোষণের সুযোগ তৈরি করে দেয়।
আর রোহিঙ্গাদের শিক্ষার ওপরও নতুন বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। গত ডিসেম্বর থেকে রোহিঙ্গাদের দ্বারা পরিচালিত কমিউনিটি স্কুলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। এতে প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষার্থী ক্ষতির শিকার হয়েছে।
এইচআরডব্লিউ অভিযোগ করেছে, শরণার্থী ও মানবিক সহায়তাকারীরা কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের ওপর এ ধরনের বাধাগুলো তাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেখছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেছেন, প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের জন্য নিঃসন্দেহে বোঝা। কিন্তু কাজ ও পড়াশোনার সুযোগ থেকে রোহিঙ্গাদের বাদ দেওয়া হলে সাহায্যের ওপর তাদের নির্ভরশীলতা আরও বাড়বে।
মীনাক্ষী গাঙ্গুলি আরও বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আত্মনির্ভরশীলতা বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের উচিত, তাঁদের কর্মসংস্থানের সুযোগগুলোকে আনুষ্ঠানিকীকরণ ও সম্প্রসারণ করা।