ঋণ খেলাপি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) পদ্ধতিকে সফলভাবে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পাশাপাশি শুনানিতে বিবাদীর অযৌক্তিক কালক্ষেপণ রোধ করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আজ মঙ্গলবার ‘অর্থঋণ আদালতে কর্মরত যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজদের ১৪৪ তম রিফ্রেশার কোর্স’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান আইনমন্ত্রী।
ভার্চুয়ালি আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থঋণ আদালতের মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা হলে হাজার হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অনাদায়ি থেকে যায়। উল্টো মামলাগুলোর পেছনে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যেমন ব্যয় হয়, তেমনি ব্যবস্থাপনায় সৃষ্টি হয় জটিলতা। বিষয়টি বিবেচনা করেই অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ সংশোধন করে আদালতের বাইরে এডিআর পদ্ধতিতে মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু লক্ষণীয় যে, বিভিন্ন কারণে এ পদ্ধতির সফল প্রয়োগ হচ্ছে না।
আনিসুল হক বলেন, ‘ব্যাংক বা অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণ মঞ্জুরির বিষয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা ও ঋণ আদায়ে বাদীপক্ষের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সারা দেশের কোন আদালতে কতটি ঋণ খেলাপি মামলা রয়েছে, কেন তা নিষ্পত্তি হচ্ছে না এবং কী উদ্যোগ নিলে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে, সেটি দেখতে হবে। সব ধরনের মামলাজট কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসাই এখন বিচার বিভাগের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, মানুষ এখন শুধু ন্যায়বিচারই (শুধু) চায় না, তারা দ্রুত ন্যায়বিচার চায়। জনগণের এই চাওয়াটাকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।’
আইনি সেবা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্ব এখন বদলে গেছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাবে আরও বদলে যাবে। উন্নত দেশগুলোতে এখন দ্রুত সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠানও এখন উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দ্রুত সেবা প্রদান করছে। তাই জনগণকে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিচার বিভাগকেও এগিয়ে যেতে হবে। তা না-হলে বিচার বিভাগ পিছিয়ে পড়বে।’
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে এ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বক্তব্য দেন।