বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এবং দেশে ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উগ্রপন্থী তৎপরতা চালানো হচ্ছে—মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান (ডিএনআই) তুলসী গ্যাবার্ডের এমন মন্তব্যের প্রতি গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এমনটি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গ্যাবার্ডের এই মন্তব্য বাস্তবতাবিবর্জিত ও বিভ্রান্তিকর, যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আঘাত করেছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত ইসলামি সংস্কৃতি সবসময়ই অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ। সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বাংলাদেশ সরকার বলেছে, গ্যাবার্ডের এই মন্তব্য কোনো প্রমাণ বা নির্দিষ্ট অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে করা হয়নি। বাংলাদেশের মতো বিশ্বের অনেক দেশই উগ্রপন্থার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। তবে বাংলাদেশ বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে আইন প্রয়োগ, সামাজিক সংস্কার এবং অন্যান্য কার্যকর কৌশলের মাধ্যমে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলেছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশকে ‘ইসলামি খেলাফতের’ সঙ্গে যুক্ত করার যেকোনো অপপ্রয়াসের কঠোর নিন্দা জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের ভিত্তিহীন মন্তব্য বাংলাদেশের জনগণ এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির জন্য কাজ করা সহযোগীদের পরিশ্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
বাংলাদেশের সরকার বলেছে, বিশ্বনেতা ও জনপরিচিত ব্যক্তিদের উচিত প্রমাণভিত্তিক বক্তব্য প্রদান করা এবং কোনো দেশ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা প্রচার না করা। সংবেদনশীল বিষয়ে মন্তব্য করার আগে সঠিক তথ্য যাচাই করা উচিত। বিভ্রান্তিকর ও অসত্য মন্তব্য জনমনে ভীতি সৃষ্টি করতে পারে এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্বব্যাপী উগ্রপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। সকল দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদ দমনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে।