হোম > জাতীয়

ইউক্রেন ইস্যুতে অবস্থান নিতে পশ্চিমা চাপে বাংলাদেশ

তাসনিম মহসিন, ঢাকা

ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে রাশিয়া। এ নিয়ে রুশ-মার্কিন দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। মিত্র দেশগুলোকে পক্ষে টানতে মিত্রদের নানাভাবে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের ওপরও এ নিয়ে চাপ বাড়ছে। এ ইস্যুতে অবস্থান পরিষ্কার করতে বলছে পশ্চিমারা। তবে বাংলাদেশ ‘বন্ধুদের’ মধ্য থেকে কোনো পক্ষ বেছে নিতে চায় না। 

আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর (ইইউ) রাষ্ট্রদূত এবং যুক্তরাষ্ট্রের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ইউক্রেন ইস্যুতে পশ্চিমা উদ্বেগ ও বাংলাদেশের অবস্থান জানতে এসেছিলেন। দেড় ঘণ্টার বেশি সময় বৈঠক করে ইউক্রেন ইস্যুতে উদ্বেগের বিষয়টি পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের কাছে জানান তাঁরা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন ইস্যুর শান্তিপূর্ণ ও টেকসই সমাধান চায় ঢাকা। 

ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার অবস্থানের বিষয়ে ঢাকার কাছে উদ্বেগ জানিয়েছেন ঢাকার ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। বৈঠক শেষে তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, ইইউসহ অন্য মিত্ররা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। ইউক্রেনের সার্বভৌম ও অখণ্ডতায় আঘাত এলে তার পরিণাম কী হবে বৈঠকে তা জানিয়েছি। কারণ ইউক্রেন ইউরোপের প্রতিবেশী দেশ, এ কারণে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের অবস্থান জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসেছিলাম।’ 

বাংলাদেশ কী উত্তর দিয়েছে জানতে চাইলে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পররাষ্ট্রসচিব আমাদের কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন। ইউক্রেন দখল হলে তা ইউরোপের নিরাপত্তা, শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর আঘাত আসবে। আর তা শুধু ইউরোপের নয়, পুরো বিশ্বের ওপরই আঘাত।’ 

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘ইউক্রেনের যে সমস্যাটি, সেখানে সীমান্ত এলাকাতে রাশিয়া যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করছে, এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন পশ্চিমারা। পশ্চিমারা চান পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে। এ বিষয়ে শুধু বাংলাদেশ নয়, সব দেশের কাছেই যৌথভাবে যাচ্ছেন তাঁরা। যুক্তরাষ্ট্রের সদ্যবিদায়ী রাষ্ট্রদূত (রবার্ট মিলার) ঢাকা ছাড়ার আগে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে কথা বলে গেছেন। আজকে দূতরা জানিয়েছেন, বিষয়টি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। পরিস্থিতি যাতে এর থেকে আর খারাপ না হয়, সে বিষয়গুলো বাংলাদেশকে জানিয়েছেন।’ 

বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘এখানে জড়িত সবগুলো দেশই বাংলাদেশের বন্ধু। বাংলাদেশ চায় না যে, বাংলাদেশকে এমন কোনো অবস্থানে ফেলে দেওয়া হোক, যেখানে বন্ধুদের মধ্যে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাংলাদেশ চায়, সব পক্ষ যাতে সর্বোচ্চ সংযম দেখায় এবং এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাতে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।’ 

এ অবস্থান নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘বর্তমানে কোনো সংঘাতই কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে থাকে না। এর বৈশ্বিক একটি চাপ সৃষ্টি হয়। ইউক্রেনকে ঘিরে কোনো ধরনের অঘটন শুরু হয়ে গেলে এর প্রভাব পুরো বিশ্বে পড়বে। যেমন, এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। রাশিয়ার দ্বিতীয় গ্যাস পাইপলাইন বন্ধ করার জন্য বলা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে গ্যাস সরবরাহের জন্য ইউরোপের বিকল্প ব্যবস্থার প্রয়োজন পড়বে। সেটি যদি মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের যে ক্রেতারা রয়েছে—বাংলাদেশসহ দেশগুলো চাপে পড়বে। সুতরাং বাংলাদেশ চায় যে ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে, কূটনীতি ও শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হোক। বাংলাদেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। এ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ রয়েছে।’ 

নাম না প্রকাশ করার শর্তে ঢাকার রাশিয়া দূতাবাসের এক কূটনীতিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুরো পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে পশ্চিমাদের উসকানির কারণে। পরিস্থিতি ঘোলাটে করার কোনো পরিকল্পনা রাশিয়ার নেই। তবে ইউক্রেনে পশ্চিমারা তাদের আধিপত্য হারিয়েছে।’ 

ইউক্রেন সংকট উত্তাপ ছড়িয়েছে জাতিসংঘেও। গতকাল সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কূটনীতিকদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। যে যার অবস্থান দৃঢ় করতে এবং বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে পক্ষে ভেড়াতে কাজ করছে মস্কো, ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলস।

আরও পড়ুন:

সাংবাদিক আনিস আলমগীরের মুক্তি চায় অ্যামনেস্টি

জিয়াউলের বিরুদ্ধে শতাধিক ব্যক্তিকে গুম-খুনের অভিযোগ আমলে নিলেন ট্রাইব্যুনাল

বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে হত্যা করা হয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর

ওসমান হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

৮ ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে অর্ধশতকোটি টাকা লুট

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২ উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি

সৌদি আরবে বিনা অনুমতিতে রাজনৈতিক সভা করায় কয়েকজন বাংলাদেশি আটক, সতর্ক করল দূতাবাস

নিজের বিচার সরাসরি সম্প্রচার চান হাসানুল হক ইনু

২০ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে অমর একুশে বইমেলা

বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে ভারতের ‘নসিহত’ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা