হোম > জাতীয়

এক দিনে কত ক্ষতি হলো রেলের?

সৌগত বসু, ঢাকা

রেলওয়ে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ফাঁকা দেখা যায়। গতকাল মঙ্গলবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকারের আশ্বাসে রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের একদিন পর আবারও সচল হয়েছে ট্রেন চলাচল। গত সোমবার (২৯ জানুয়ারি) রাত ১২টা থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘট গতকাল মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ১২টার সময় প্রত্যাহার করা হয়। এরপর আজ বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন ছেড়ে যায়। প্রায় ৩০ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় দেশজুড়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের।

রেলওয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানান, দাবি পূরণের আশ্বাসের পরও শ্রমিকদের সঙ্গে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানো যায়। বন্ধ থাকার সময় অনেক টিকিট রিফান্ড করা হয়েছে। আবার অনেকেই রেলের টিকিট দিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-এর (বিআরটিসি) বাসে যাতায়াত করেছেন। এ জন্য মঙ্গলবারে সব মিলিয়ে কত টাকা ক্ষতি হয়েছে সেটি পেতে একটু সময় লাগবে।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, সারা দেশে প্রতিদিন ১১২টি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এই অচলাবস্থার কারণে ঢাকার রেল বিভাগে অন্তত ১ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ের একাধিক সূত্র।

রাজধানীতে ৩০ হাজারের বেশি যাত্রী মঙ্গলবার ভোগান্তিতে পড়েন। রেলওয়ের পশ্চিম অঞ্চলে ২৮ তারিখ সারা দিন ও ২৯ তারিখের (বুধবার) কিছু ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় এই অঞ্চলে ক্ষতির পরিমাণ ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলের আওতায় রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগে প্রায় ৬৭ হাজার যাত্রীকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনিক ও পরিচালনার সুবিধার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের কার্যক্রম দুই অঞ্চলে বিভক্ত। এর মধ্যে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগ নিয়ে পশ্চিমাঞ্চল। এ অঞ্চলে পরিচালনা করা হয় ৫৮টি আন্তনগর ট্রেন। পূর্বাঞ্চলে মোট ৫৪টি আন্তনগর ট্রেন পরিচালনা করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ নিয়ে গঠিত এ অঞ্চল।

কমলাপুর স্টেশন সূত্র বলছে, এই স্টেশন থেকে প্রতিদিন ৪২টি আন্তনগর ও ২৪টি মেইল ট্রেনসহ মোট ৬৬টি ট্রেনে সারা দেশের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত কোনো ট্রেন চলেনি।

ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, রেলের সারা দেশে কত ক্ষতি সেটি এখন বলা মুশকিল। তবে আমাদের ঢাকা বিভাগীয় অঞ্চল নিয়ে একটা ধারণা আছে। গত ডিসেম্বরে ১০ লাখ যাত্রী কমলাপুর স্টেশন থেকে সারা দেশের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। আর এই সময় টিকিট বিক্রি করে রেলওয়ে আয় করেছে ৩৯ কোটি টাকা। এটাকে দিনের হিসাবে গড় করলে মঙ্গলবারের ক্ষতি সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। সেই হিসাবে দিনে ৩৩ হাজার যাত্রী ঢাকা থেকে যাতায়াত করেন। আর এই সময়ে টিকিট বিক্রি হয় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার মতো।

বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. মহব্বত জান চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কমলাপুর স্টেশন থেকে ১ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। ভোগান্তিতে ছিলেন প্রায় ৩৩ হাজার যাত্রী।

এদিকে রেলের পশ্চিমাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) সুজিত কুমার বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, তার পুরো পশ্চিমাঞ্চলে ২৮ তারিখ সারা দিন ট্রেন চলেনি আর আজ বুধবার কিছু ট্রেন চলছে না। পশ্চিমাঞ্চলে সব মিলিয়ে ২ কোটি ১৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। আর ৬৭ হাজার যাত্রী সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

পূর্বাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানকে একাধিকবার চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি।

বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (চট্টগ্রাম) এ বি এম কামরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ট্রেন বন্ধ থাকায় দিনে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয় চট্টগ্রাম বিভাগে। আর পূর্বাঞ্চলে ২ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হতে পারে।

রেলের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সুবক্তগীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, রেলের পূর্বাঞ্চল ঢাকা বিভাগীয় রেলের আওতায়। তাই ঢাকা থেকে ক্ষতির যে তথ্য দেওয়া হয়েছে সেটিই ঠিক।

এদিকে মঙ্গলবার ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কমলাপুর স্টেশনকেন্দ্রিক ১ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন ম্যানেজার সাজেদুল ইসলাম। এ ছাড়া কোচ ব্যালান্সের কারণে জয়ন্তিকা ও বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের আজকের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আজ বুধবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নিজ কার্যালয়ে তিনি এসব তথ্য জানান।

সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের স্টেশন থেকে সাধারণত প্রতিদিন ১ কোটি ১৫ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আয় হয়। গতকাল বন্ধ থাকায় এই ক্ষতি হয়েছে।’

স্টেশন ম্যানেজার সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘যে দুটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে সেগুলোর টাকা যাত্রীদের রিফান্ড করা হবে। যাঁরা অনলাইনে কেটেছেন তাঁদের অনলাইনে ফেরত দেওয়া হবে, যাঁরা সরাসরি কাউন্টার থেকে কিনেছেন তাঁদের সরাসরি দেওয়া হবে। যেহেতু গভীর রাতে সিদ্ধান্ত হয়েছে (ধর্মঘট প্রত্যাহার), তাই যাত্রীদের এসএমএস দেওয়া হয়নি। যাঁরা যেতে পারেননি, তাঁদের বিষয়ে কী করা যায় আমরা তা দেখছি।’

বদলি ঠেকাতে আদালতে মাদক নিয়ন্ত্রণের এডি

অবৈধ বিদেশিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে টাস্কফোর্স

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ভাবনা

প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে চাপে আছে সরকার: আইসিজির প্রতিবেদন

প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহির জন্য আস্থা ভোটের সুপারিশ

জনগণের সুরক্ষা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব: পরিবেশ উপদেষ্টা

নারী সাংবাদিককে প্রবেশে বাধা দেওয়ার বিষয়ে যা বলল ধর্ম মন্ত্রণালয়

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা: গ্রেপ্তার নিয়ে পুলিশের অসহযোগিতায় ট্রাইব্যুনালের অসন্তোষ

বাংলাদেশে সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি জাপানের

১৪ ফেব্রুয়ারি রাত শবে বরাত

সেকশন