যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁদের নানি-দাদির বয়সী হচ্ছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। উনি রাষ্ট্রের অভিভাবক। উনি যেভাবে কথাটা বলেছেন সেটা কি ওনার বয়স, অবস্থানের সঙ্গে মানানসই কি না সে প্রশ্ন আগে করতে হবে। এরপর ছাত্রছাত্রীরা যে স্লোগান দিয়েছে, সেটা যৌক্তিক কি না সে প্রশ্ন আসবে।
ছাত্রছাত্রীদের স্লোগানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ভিন্নভাবে দেখা যাবে না। এটাকে কন্ট্রাসচুয়ালি দেখতে হবে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা বেদনাহত হয়ে, দুঃখ পেয়ে, হতাশ হয়ে কথাটা বলেছে। তাঁরা ‘আমি রাজাকার’ নিজেকে পরিচয় দেওয়ার জন্য বলেননি। কোনোদিন কেউ এ স্লোগান দেননি। এ স্লোগান শুনতে ভালো লাগার কথা নয়।
কিন্তু যখন একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী এভাবে বলেন, তখন সেটার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এভাবে আসছে। এটাকে এভাবেই দেখতে হবে। এখানে খামাখা ছাত্রছাত্রীদের এককভাবে দোষ দেওয়া যাবে না। এখন প্রশ্ন তোলা যায়, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে এতটা প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত হয়েছে কি না। তবে সেটা আলাদা বিষয়। যদি একদম নির্দিষ্ট করে বলা যায়, তবে এ স্লোগানটা শুনতে খুবই খারাপ লাগে। কিন্তু এটার প্রেক্ষাপট নির্মিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে।
সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতৃত্বে যে হামলা হয়েছে, সেটা গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ। এই অপরাধ করতে ছাত্রলীগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং লেলিয়ে দিয়েছেন সরকারের কিছু মন্ত্রী। এই গুরুতর ফৌজদারি অপরাধে তাঁরাও অপরাধী। দেশে যদি আইন থাকে, বিচার থাকে অবশ্যই তাঁদের বিচার হওয়া উচিত।
প্রেক্ষাপট বাদ দিয়ে স্লোগানকে পুঁজি করে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। এটা করা হয়েছে, এ ধরনের হামলার প্রেক্ষাপট রচনার জন্য।
লেখক: অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক