হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

৭১ সংগঠনের নাট্যোৎসব

সম্পাদকীয়

আজ সম্পাদকীয় লেখার অনেক বিষয় ছিল। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে লেখা যেত, বইমেলা নিয়ে লেখা যেত, লেখা যেত দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে। কিন্তু লিখতে গিয়ে আজকের পত্রিকার বিনোদন পাতায় একটি সংবাদের দিকে চোখ আটকে গেল। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নাট্যোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকা মহানগরীর ৭১টি নাট্য সংগঠনের উদ্যোগে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। শুধু সংশয়, এখন নাটকের প্রতি আগের আগ্রহ আছে তো দর্শকের?

সাংস্কৃতিকভাবে অগ্রসর মানুষ নাটক দেখতে আকৃষ্ট হয়। সারা পৃথিবীতেই মঞ্চনাটক দিশারি হয়ে দেখা দেয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পর যে কয়টি জায়গায় আমরা সফল হয়েছিলাম, তার প্রধান একটি হলো মঞ্চনাটক। বিশেষ করে বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মঞ্চে একের পর এক তুখোড় নাটক দেখার জন্য দর্শকেরা ভিড় করতে থাকেন। পরে সেই তালিকায় যুক্ত হয় গাইড হাউস মঞ্চ। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় পর্যন্ত বীরদর্পে মঞ্চ কাঁপিয়েছেন আমাদের নাট্যজগতের কীর্তিমানেরা। সমাজে থাকা নানা অসংগতি দূর করার বার্তা থাকত সেইসব নাটকে, দেশপ্রেমের প্রকাশ থাকত তাতে, থাকত দেশি-বিদেশি নাটক নিয়ে নিরীক্ষা। কিন্তু কালে কালে নাটকের সে সুদিন গত হয়েছে। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা তৈরি হওয়ার পরও দর্শকদের মধ্যে নাটক বিষয়ে সে রকম সাড়া আর মেলেনি। ফলে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো নাট্যকর্মীরা রুচিশীল নাটক করলেও দর্শক পাচ্ছেন না। শিল্পী ও দর্শকের মিথস্ক্রিয়ায় একটি নাটক পূর্ণতা পায়। ৭১ নাট্যদলের ১৪টি নাটক কি আমাদের সেই পূর্ণতার দিকে নিয়ে যাবে?

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটনে যে ব্রডওয়ে শোগুলো হয়, সেগুলো নাটককে নিয়ে গেছে আকাঙ্ক্ষার স্বর্ণচূড়ায়। কারিগরি জাদুকরি দক্ষতা আর অসাধারণ নির্দেশনা-অভিনয়ের মাধ্যমে তা রুচিশীল দর্শকের মন কেড়েছে। এ সবই হয়েছে নাটকের প্রতি মানুষের ভালোবাসার কারণে। যার ফলে বিশাল পরিমাণে অর্থ খরচ করেও মানুষ সে নাটক দেখে। কোনো কোনো নাটক চলে বছরের পর বছর। তারপরও ‘প্রেক্ষাগৃহ পূর্ণ’ কথাটি লেখা থাকে মিলনায়তনের সামনে।

নাটক রুচিশীল মানুষ গড়ে তুলতে পারে। এই নাট্যোৎসব যদি রুচিশীল মানুষকে নাট্যালয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে, তাহলে তা সবার জন্যই আনন্দ সংবাদ হয়ে উঠবে।

নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে ৭১টি নাট্য সংগঠন। এটি এই উৎসবের একটি তাৎপর্যময় দিক। সংখ্যাটি আমাদের মনে করিয়ে দেবে বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন মুক্তিযুদ্ধের কথা। এ কথা সত্যি, যে অর্জনের পথ বেয়ে বাংলাদেশ তার কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্রের কাছে পৌঁছেছে, তার প্রতিটি পর্যায়কেই উৎসবের রূপ দেওয়া উচিত। কিন্তু তার আগে ঠিক করতে হবে, আমরা ঠিক পথে আছি কি না, একাত্তরকে আমরা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন বলে মনে করি কি না, শিল্প-সংস্কৃতিকে জাতির এগিয়ে যাওয়ার সোপান বলে মনে করি কি না। এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের ওপরই নির্ভর করছে দেশ আলোর দিকে যাবে, নাকি অন্ধকার ভবিষ্যতের খোঁজ দেবে। এই নাট্যোৎসব আলোর সন্ধান দিক, এই আমরা চাই।

শান্তি এখন খুব প্রয়োজন

শান্ত হোন

সংযোগ সড়কহীন সেতু

যা করণীয়

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

কেন থমকে যাচ্ছে মেট্রোরেল