‘খান আতা’ নামেই খ্যাতি পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এই অভিনেতা-পরিচালকের পুরো নাম খান আতাউর রহমান। চলচ্চিত্রে যত রকমের গুণ থাকা দরকার, সবই ছিল তাঁর।
খান আতার জন্ম ১৯২৮ সালের ১১ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামে। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন তিনি। পড়ালেখায় মেধাবী হয়েও বারবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন শুধু সিনেমার জন্য। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন, সেটা ছেড়ে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে পালিয়ে চলে গেছেন ভারতে। ঘুরে বেড়িয়েছেন মুম্বাইয়ের রাস্তায় রাস্তায়, রাত কেটেছে ফুটপাতে।
সেখানে কাজ করেছেন এক ক্যামেরাম্যানের সহকারী হিসেবে। তারপর পাকিস্তান,
যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডসের নানান শহরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। লন্ডনে কাজ করেছেন শিল্পী এস এম সুলতানের সঙ্গে।
১৯৫৭ সালে দেশে ফিরে এসে কাজ শুরু করেন পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকায়। চলচ্চিত্রের সঙ্গে তিনি যুক্ত হন আখতার জং কারদার পরিচালিত ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ সিনেমায়। এর পরের বছর অভিনয় করেন ‘এ দেশ তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে। সিনেমাটিতে অভিনয়ের পাশাপাশি সংগীত পরিচালক, গীতিকার ও সুরকার হিসেবেও অভিষেক
হয় তাঁর। এরপর অভিনয় করেন ‘কখনো আসনি’, ‘কাঁচের দেয়াল’, ‘সোনার ফুল, ‘সূর্যস্নান’, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’, ‘জোয়ার ভাটা’, ‘আপন পর’, ‘ত্রিরত্ন’, ‘সুজন সখী’, ‘মাটির মায়া’ প্রভৃতি চলচ্চিত্রে।
‘অনেক দিনের চেনা’ চলচ্চিত্র দিয়ে তাঁর পরিচালনায় অভিষেক হয়। এরপর নির্মাণ করেছেন ‘রাজা সন্ন্যাসী’, ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আরশি নগর’ ইত্যাদি। গীতিকার হিসেবেও তিনি সফল ছিলেন। ‘এ খাঁচা ভাঙব আমি কেমন করে’, ‘এ কি সোনার আলোয়’, ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’র মতো জনপ্রিয় গানগুলো তাঁর লেখা। প্রায় ৫০০ গান লিখেছেন তিনি। খান আতা নির্মিত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘এখনো অনেক রাত’ মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালে।
তিনি ১৯৯৭ সালের ১ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।