হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

শুভ বড়দিন

সম্পাদকীয়

ডিসেম্বরের প্রান্তে এসে আমরা যখন নতুন বছরের আশা-প্রত্যাশা নিয়ে বিশ্লেষণ করতে থাকি, ঠিক তখনই আসে বছরের শেষ উৎসব বড়দিন, যা ভালোবাসা ও একতার বার্তা বহন করে। বড়দিন মানেই শান্তি, ভালোবাসা এবং নতুন সূচনার প্রতীক। যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন হিসেবে পালিত হলেও ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই মিলে উদ্‌যাপন করে বড়দিন। বাংলাদেশের মতো একটি বহুবিধ সংস্কৃতির দেশে বড়দিন যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

আজ ২৫ ডিসেম্বর, সেই বড়দিন। বেথলেহেমের এক গোয়ালঘরে ভূমিষ্ঠ হওয়া যিশুখ্রিষ্টের জন্মের পবিত্র ক্ষণকে স্মরণ করতেই পৃথিবীজুড়ে আজ উদ্‌যাপিত হচ্ছে বড়দিন। যিশু আবির্ভূত হন ত্রাতা হিসেবে, যিনি হিংসা-বিদ্বেষ, পাপ-পঙ্কিলতা বর্জন করে মানুষকে ভালোবাসা, করুণা, পবিত্রতা ও সুন্দরের পথ দেখিয়েছেন। মানুষকে মুক্তির খোঁজ দিয়েছেন। আজ তাঁরই বন্দনা গাওয়ার দিন, যিশুর অনুসারী খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য সবচেয়ে বড় উৎসব।

ক্রিসমাস ট্রি সাজানো, উপহার বিনিময়, গির্জায় প্রার্থনা, সমবেত কণ্ঠে ক্রিসমাস ক্যারোল গাওয়া, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো—খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য বাড়তি খুশি যোগ করে বড়দিনের এই ছুটি। এই খুশিকে ম্লান করে দেয় বিশ্বজুড়ে ঘটতে থাকা অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনা। তবে এটাও ঠিক যে এ রকম সংকটের মুহূর্তেই বড়দিনের বার্তা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক—আমাদের সবার মধ্যে ভালোবাসা ও একতার বীজ বপন করতে হবে; ধর্ম-বর্ণ-জাতিনির্বিশেষে সবার প্রতি সমান সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।

এই দিন যিশুখ্রিষ্টের জন্মের কাহিনি পাঠ ও ধ্যান করা হয়। সেই কাহিনি অবলম্বনে গির্জায় এবং বাড়িতে বাড়িতে গোশালা নির্মাণ করে ফুলপাতা দিয়ে সাজানো হয়। সঙ্গে গানবাজনা, নাম-সংকীর্তন, ভোজন, আনন্দ-উল্লাস তো চলেই। এসব উৎসব-আয়োজনের চেয়ে অবশ্য খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের কাছে বড় নিজেদের হৃদয়-মন ও অন্তরাত্মাকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করার প্রয়াস। তাঁরা বড়দিনের পূর্ববর্তী চার সপ্তাহব্যাপী ধ্যান-অনুধ্যান, মন পরীক্ষা, ব্যক্তিগত পাপ স্বীকার, সমবেত পুনর্মিলন বা ক্ষমা-অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষে মানুষে সম্পর্কের উন্নয়ন করতে সচেষ্ট হন।

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষেরা বড়দিন উদ্‌যাপন করে আসছেন শান্তিপূর্ণভাবে। আমরা আশা করব, এই শান্তির ব্যত্যয় যেন কখনোই না হয়। অন্য ধর্মাবলম্বী বন্ধুরাও তাঁদের সঙ্গে শরিক হন বড়দিনের উৎসবে। সরকারিভাবে বড়দিন পালন করার জন্য ছুটি থাকে প্রতিবছর। বলতেই হয়, এটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি নির্মল দৃষ্টান্ত।

বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার নতুন স্বপ্ন নিয়ে চলতে শুরু করেছে আমাদের প্রিয় স্বদেশ। এই মুহূর্তে বড়দিন আমাদের সবার জন্য একটি সুযোগ—সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার নেওয়ার। আমরা যদি সবাই মিলে বড়দিনের মূলমন্ত্র অনুসরণ করে চলতে পারি, সব ধরনের অনাচার, পাপাচার বর্জন করে মানুষকে ভালোবেসে একতার পথে চলতে পারি, তাহলে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।

আসুন, এই বড়দিনে আমরা সবাই মিলে ভালোবাসা ও একতার শপথ নিই, সবার তথা দেশের মঙ্গল কামনা করি।

সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা। শুভ বড়দিন।

শান্তি এখন খুব প্রয়োজন

শান্ত হোন

সংযোগ সড়কহীন সেতু

যা করণীয়

নিরাপত্তাহীনতা

আজ বিজয়ের দিন

রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা

গুলিবিদ্ধ হাদি ও নির্বাচন

নির্বাচনের পথে দেশ

কেন থমকে যাচ্ছে মেট্রোরেল