নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
গণ-অভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠা ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজে লাগাতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। সে অনুযায়ী দ্রুত সময়ে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।
আজ সোমবার সকালে পল্টনে ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে সিপিবির মহাসমাবেশে বোমা হামলায় শহীদদের স্মরণে আয়োজিত শ্রদ্ধা নিবেদন ও সমাবেশে এ কথা জানায় সিপিবি।
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠা ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ার সংগ্রাম অগ্রসর করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগানো যাচ্ছে না। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জন-জীবনের সংকট দূর করতে পারছে না। আগের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বহাল রেখেই আরও ভ্যাট-ট্যাক্স চাপিয়ে দিয়ে মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে।’
পল্টন সমাবেশে বোমা হামলার বিচার আজও হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ দেশে দ্বি-দলীয় রাজনৈতিক ধারার বিপরীতে গণমানুষের স্বার্থ রক্ষায় নীতিনিষ্ঠ বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তোলায় পদে পদে বাধা আসছে। এখনো এই অপচেষ্টা চলছে। ২০০১ সালে ২০ জানুয়ারি লাল পতাকার হাজার হাজার মানুষের উত্থান ঠেকাতে সাম্প্রদায়িক, অগণতান্ত্রিক, লুটেরা শাসকগোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছে। আজও এর সঙ্গে জড়িতদের ও নেপথ্যের হোতাদের গ্রেপ্তার ও বিচার শুরু হয়নি।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দলের সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘সব কাজ করার দায়িত্ব এই সরকারের নয়। বরং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।’
দলের সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ বলেন, ‘জনজীবনের সংকট দূর করতে না পারলে সরকারের প্রতি জনগণের যে আস্থা ছিল তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে।’
অনুষ্ঠানে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চা, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি), উদীচী, বাংলাদেশের কৃষক সমিতি, বাংলাদেশের খেতমজুর সমিতি, ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, সাপ্তাহিক একতা, হকার্স ইউনিয়ন, গৃহকর্মী শ্রমিক ফেডারেশনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।