নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিয়ে তফসিল ঘোষণা করলে সারা দেশে লাগাতার হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাসদ (মার্কসবাদী)।
আজ শুক্রবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে পার্টির ৪৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ১০৬ তম রুশ বিপ্লব বার্ষিকী উপলক্ষে বাসদের (মার্কসবাদী) উদ্যোগে সমাবেশ থেকে এসব কথা বলেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের একটা বিশাল সংখ্যক মানুষের আজ কাজ নেই, ভূমিহীন-গৃহহীন বাড়ছে, না খেয়ে থাকা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের ২৫ হাজার টাকা বেতনের যৌক্তিক দাবি মেনে না নিয়ে বরং তাঁদের ওপর পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে খুন করা হচ্ছে। যুবক-তরুণদের ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনীতে পরিণত করেছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ সংগঠনের নেতা কর্মীদের কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাস ও সহিংসতা সৃষ্টি করছে। অন্যদিকে দেশে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে, অতি ধনী বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে আছে। সুইস ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি জমা আছে এমন বাংলাদেশির সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে।
বক্তারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অল্পসংখ্যক বিত্তবান মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। অর্থনৈতিক শোষণ ও লুটপাটে বিপর্যস্ত মানুষ যাতে কোনো প্রতিবাদ করতে না পারে সে জন্য দমনমূলক আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। সমস্ত মতকে দমন করে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে তাঁরা। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে এবং মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগে অবশ্যই আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আজ গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক ধারাকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশে শোষণ মুক্তির লড়াই শক্তিশালী হলে পুঁজিবাদকে উচ্ছেদ করে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত মুক্তি অর্জিত হবে। যদি আজ গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোও রক্ষা করতে চাই, তবে বামপন্থাকে শক্তিশালী করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। আবার বামপন্থী শক্তিকে একটা উন্নত নৈতিকতার ভিত্তিতেই গণ-আন্দোলনের জোয়ার তৈরি করতে হবে। যে জোয়ার এ দেশের মানুষ দেখেছিল মুক্তিযুদ্ধে, সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ এই আন্দোলনকে সফল করার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। সমাবেশে কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানার সভাপতিত্বে ও সদস্য রাজু আহমেদের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জয়দীপ ভট্টাচার্য, সীমা দত্ত ও রাশেদ শাহরিয়ার।