নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের সঙ্গে সীমান্ত হত্যা, পানি বণ্টনসহ সকল রাজনৈতিক সংকট ন্যায্য এবং অধিকারের ভিত্তিতে সমাধান করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। অন্যথায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চিরস্থায়ীভাবে শত্রুতা তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন জোটের নেতারা।
আজ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) প্রেসক্লাবের সামনে ভারতে বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননাকারীদের শাস্তির দাবি ও উভয় দেশের জনগণের ঐক্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে এসব কথা বলেন তারা।
সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আগরতলায় যেটা ঘটেছে এটা কোনো কূটনৈতিক শিষ্টাচারে পড়ে? একটা দেশে আরেকটা দেশের যে দূতাবাস থাকে সেটিকে রক্ষার ১০০ শতাংশ দায়িত্ব সরকারের। তারা (ভারত) ফেল করেছে।’ তিনি অনতিবিলম্বে আগরতলার ঘটনার অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের অনেক সমস্যা ঝুলে আছে। সীমান্ত হত্যা করে ভারত বলত দুর্বৃত্তরা এটা করেছে। আর আমাদের দেশের আগের সরকার তাদের সুরে কথা বলত। আমাদের সঙ্গে তারা (ভারত) অসম বাণিজ্য করেছে। সুন্দরবনে তারা ফ্রেন্ডশিপ কোম্পানির নামে রামপাল প্রজেক্ট করেছে। ফ্রেন্ডশিপের নামে যে কোম্পানিগুলো করা হচ্ছে, এটা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ভারতের সঙ্গে আমাদের চিরস্থায়ীভাবে শত্রুতা তৈরি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের ৫৪টি নদীর পানির উৎস ভারতে। তারপরও আমরা কেন পানি পাই না? কেন তিস্তা সমস্যার সমাধান হয় না? কেন আমাদের পানির জন্য হাহাকার করতে হয়? এসব সমস্যার সমাধান কেন হয় না। ভারতের সঙ্গে ঝুলে থাকা অসংখ্য সমস্যা রয়েছে। ন্যায্য এবং অধিকারের ভিত্তিতে সব সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘আপনি বাংলাদেশে শান্তিবাহিনী পাঠানোর কথা বলেছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই। এই বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবি জানাই।’
বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আবদুস সাত্তার বলেন, ‘ভারতের পত্রিকা এবং মিডিয়াগুলোতে ভুয়া, মিথ্যা এবং পরিকল্পিত তথ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করছে। এই কল্পিত কাহিনি টিকবে না।’
বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু প্রমুখ। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা–কর্মীরা।