নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বেড়েছে এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এ দেশে বিপন্ন অবস্থায় আছে বলে ক্রমাগত প্রচারণা চালাচ্ছে ভারত। বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত বাংলাদেশে একটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় তোপখানা রোডে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল হক।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে সাইফুল হক বলেন, ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পরে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার পরাজয়কে বিজেপি সরকার তাঁদের পরাজয় হিসেবে দেখছে। তারা বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতা, গণ–অভ্যুত্থানবিরোধী তৎপরতা, অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ জঙ্গিবাদী দেশ, অসহিষ্ণু দেশ এবং সংখ্যালঘুরা এখানে গুরুতরভাবে বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের এমন একটা চেহারা দেখাতে প্রতিবেশী দেশ ভারত পরিকল্পিতভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে।
চিন্ময় কৃষ্ণের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে ভারতের দেওয়া বিবৃতি ‘উসকানির শামিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের বিবৃতির ভাষা দেখে মনে হয়েছে, যাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে—তিনি ভারতের নাগরিক।’
সরকারকে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সরকার ঘটনা ঘটার পর কাজ করবে, সেটা নয়। লক্ষণ দেখলেই বোঝা যায়, কী হতে পারে। গত কয়েক দিন যেসব ঘটনা ঘটেছে, এর পেছনে সরকার হেঁটেছে। সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত সক্রিয় নয়।’
চট্টগ্রামে সহিংসতার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পরিকল্পিতভাবে আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘হত্যার যে ধরন, তা দেখে বোঝা যায়, তারা উসকানি দিচ্ছে, যাতে মুসলমানরা হিন্দুদের ওপর হামলা করে। সেই হামলাগুলোকে বাংলাদেশের বাস্তবতা হিসেবে সারা দুনিয়ায় দেখানো যায়। অভ্যুত্থানকে কালিমালিপ্ত করা যায়।’
নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে উসকানি দেওয়া হচ্ছে, বিভিন্ন মাধ্যমে যে উসকানি দেওয়া হচ্ছে, জনগণকে সচেতন থেকে তা মোকাবিলা করতে হবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন বলেন, প্রতিবেশী দেশের পক্ষ থেকে যে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে, একটি দেশের অভ্যন্তরীণ প্রশ্নে এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানোর নজির নেই।